হিন্দু মুসলিম বিয়ে করার প্রক্রিয়া এবং সাধারন জিজ্ঞাসা
ইসলাম ধর্ম অনু্যায়ী একজন হিন্দু নারীকে একজন মুসলিম বিবাহ করতে পারে না। তবে সেই নারী যদি তার ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্মে রূপান্তরিত হয় তবে সেই নারীকে বিয়ে করতে আর ইসলামে বাধা থাকে না। তবে ধর্ম পরিবর্তন না করেও বিবাহ করা যায় স্পেশাল ম্যারেজ আইন ১৮৭২ অনুযায়ী।
একজন মুসলিম অন্য ধর্মের মানুষকে বিয়ে করতে পারে দুটি নিয়ম অনুযায়ীঃ
১। ধর্ম পরিবর্তন করে।
২। বিশেষ বিবাহ আইন ১৮৭২ এর নিয়ম অনুযায়ী।
ধর্ম পরিবর্তন করে হিন্দু-মুসলিম বিয়ে করার ধাপগুলো
১। ধর্ম পরিবর্তনঃ প্রথমেই হিন্দু নারীকে তার ধর্ম পরিবর্তন করতে হবে কোর্ট এফিডেভিট এর মাধ্যমে। এজন্য বিশ্বস্ত একজন আইনজীবির শরনাপন্ন হতে হবে। এফিডেভিট এর মাধ্যমে ধর্ম ত্যাগ করার ঘোষনা দেয়ার মাধ্যমে বৈধভাবে তার ধর্ম পরিবর্তন হয়ে যায়। আপনারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনঃ ০১৭৮৫৪৬০০৮৫
২। বিবাহের হলফনামাঃ ধর্ম পরিবর্তন হওয়ার হলফনামা সম্পাদন করার পর পরবর্তীতে বিবাহ করার হলফনামা সম্পাদন করিতে হয়। যদিও এটি বাধ্যতামূলক নয় তবে করে রাখা ভাল।
৩। কাজীর মাধ্যমে বিবাহ পড়ানোঃ একজন কাজীর মাধ্যমে বিবাহ পড়িয়ে বিবাহ সুস্পন্ন করতে হয়।
৪। কাবিননামাঃ বাংলাদেশের আইন অনু্যায়ী মুসলিম বিয়ে রেজিষ্ট্রি করে রাখতে হয়। সেজন্য একজন বিবাহ রেজিষ্টার এর কাছে গিয়ে বিবাহ রেজিষ্ট্রি করে নিতে হয়।
আপনারা হিন্দু মুসলিম বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে এ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান রাশেদ এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন তিনি এই বিষয়ে আপনাকে যথাযথভাবে সাহায্য করতে পারবে। আপনার সকল কাজ অতন্ত গোপনীয়তার সাথে এবং সঠিকভাবে তার মাধ্যমে করিয়ে নিতে পারবেন। আপনারা অল-ইন-অল সার্ভিস পেয়ে যাবেন তার কাছে।
বিশেষ বিবাহ আইন অনু্যায়ী বিবাহ
একটি পরিস্থিতি বিবেচনা করুন যেখানে একটি মুসলিম ছেলে এবং একজন হিন্দু বা খ্রিষ্টান মেয়ে বিবাহ করবে, অর্থাৎ দুই বিভিন্ন ধর্মের দুজনের বিবাহ হতে চায় এবং কেউই তাদের ধর্ম পরিবর্তন করতে চায় না। প্রত্যেক ব্যক্তির বিবাহ যে ধর্ম অনুসরণ করেন, সে ধর্মের অনুযায়ী বিবাহ হয়, কিন্তু যদি বিভিন্ন ধর্মে বিবাহ হয়, তবে তাকে বিশেষ বিবাহ বলা হয়। বাংলাদেশে, বিশেষ বিবাহ আইন ১৮৭২ অনুযায়ী চালু করা হয়। এই আইনে দেশের বাহিরের বিভিন্ন ধর্মী নাগরিক এবং বাংলাদেশী নাগরিকের মধ্যে বিবাহ সম্পন্ন হতে পারে। তবে এ বিবাহের জন্য যারা যোগ্য, বিবাহ সম্পাদনের শর্তাবলি কী, কিভাবে এটি সম্পাদিত হবে, এ বিবাহের ফলে জন্মগ্রহণ করা সন্তান কোন ধর্মের অনুযায়ী পরিচিত হবে, বিবাহের স্বামী বা স্ত্রী কোন ধর্ম অনুসরণ করবেন – এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি আলোচনা করব।
বিশেষ বিবাহের আইনে যদি বিয়ে করতে চাই, তবে ছেলে ও মেয়েরা অবিবাহিত থাকতে হবে। ছেলের বয়স অবশ্যই ২১ বছরের বেশি এবং মেয়ের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে। প্রথমে পক্ষগুলি বিশেষ বিবাহ নিবন্ধকের কাছে গিয়ে লিখিত নোটিশ পাঠাবে, যেখানে এক পক্ষ অপর পক্ষের কাছে বিয়ের জন্য ইচ্ছুক। নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, এ নোটিশ প্রেরণের ১৪ দিন পর বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে। এক পক্ষ নিবন্ধকের মাধ্যমে বিয়ের ১৪ দিন আগে অপর পক্ষকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নোটিশ প্রেরণ না করলে বিয়ে সম্পন্ন করা যাবে না। বিবাহের সময়ে অন্তত তিনজন সাক্ষী উপস্থিত থাকতে হবে এবং পাতি-পত্নী দুটির অবশ্যই সমান শরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। বিয়েটি অবশ্যই বিশেষ বিবাহ নিবন্ধকের উপস্থিতিতে সম্পন্ন করতে হবে। আইন-মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত অনেক স্পেশাল ম্যারিজ রেজিস্ট্রার রয়েছেন, অনেক এডভোকেটও স্পেশাল ম্যারিজ রেজিস্টারে তালিকাভুক্ত, বিয়ে সম্পন্ন হলে নিবন্ধক তা সরকারি ভলিউমে নিবন্ধন করবেন এবং একটি ম্যারিজ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদান করবেন।
বিশেষ বিবাহ আইন অনুযায়ী বিবাহের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা অতন্ত দ্রুততার সাথে এবং সুক্ষভাবে আপনার কাজটি করে দিব।
প্রশ্ন : একটি মুসলিম ছেলের যদি একটি হিন্দু মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়, সে ক্ষেত্রে বিয়েটা কি শরিয়াহভিত্তিক হবে?
উত্তরঃ মুসলিম ছেলের জন্য হিন্দু বা মুসরিক নারীর সাথে বিয়ে করা জায়েজ নয়। কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, মুসরিক নারীদের সাথে যতক্ষণ ঈমান না আনা হোক ততক্ষণ তারা সাথে বিয়ে করা নিষিদ্ধ। তারা যদি ঈমান আনেন তবে তাদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে, অন্যথায় ইসলামিক শিরোনামে এ ধরনের বিয়ে হারাম এবং কোনো ধরনের বৈধতা নেই, এটি বাতিল হিসাবে গণ্য হবে।
প্রশ্ন : হিন্দু মেয়েকে মুসলমান বানিয়ে বিয়ে করা কি যাবে?
উত্তরঃ জি এতে কোন বাধা নেই। ইসলামে একজন মূর্তি পূজারিকে বিয়ে করা অবৈধ করা হয়েছে। তবে মূর্তি পূজারি যদি ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে তবে তাকে বিয়ে করা যায়েজ।
প্রশ্ন : কোন হিন্দু মেয়েকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করে বিবাহ করা যাবে কি?
উত্তরঃ যাবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ করো না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে’ (বাক্বারাহ ২২১)।
প্রশ্ন : একটা মুসলিম ছেলে কি একটা হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে?
উত্তরঃ পারবে না। তবে হিন্দু মেয়েটি যদি তার ধর্ম পরিবর্তন করে সেক্ষেত্রে পারবে।
প্রশ্ন : হিন্দু ও মুসলিমের মধ্যে বিয়ে কি বৈধ?
উত্তরঃ অবৈধ যতক্ষন পর্যন্ত না ধর্ম পরিবর্তন করে।
প্রশ্ন: মুসলিম ছেলের যদি কোনো খ্রিস্টান মেয়ের সাথে বিয়ে হয়, তা কি বৈধ হবে?
উত্তর: ইসলামে একজন মুসলিম পুরুষকে কিতাবি (খ্রিস্টান বা ইহুদি) মহিলার সাথে বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে এটি নির্দিষ্ট শর্তাবলীর উপর নির্ভরশীল। উভয়কে অবশ্যই ইসলামের নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে এবং খ্রিস্টান মহিলাকে অবশ্যই সত্যিকারের খ্রিস্টান হতে হবে, যিনি মূর্তি পূজা বা শিরকের সাথে জড়িত নন।
প্রশ্ন: একজন মুসলিম মেয়ে কি খ্রিস্টান বা ইহুদি ছেলেকে বিয়ে করতে পারবে?
উত্তর: না, ইসলামে মুসলিম মহিলাদের জন্য অমুসলিম পুরুষদের সাথে বিয়ে করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। একজন মুসলিম মেয়ে কেবলমাত্র মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করতে পারে।
প্রশ্ন: কোন অমুসলিমকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিয়ে বিয়ে করা কি বৈধ?
উত্তর: হ্যাঁ, বৈধ। যদি কোন অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তবে তাকে বিয়ে করা যাবে। ইসলামে নবীজী (সা.) বলেছেন, ‘ইসলাম পূর্বের সমস্ত পাপ মুছে ফেলে।’ অতএব, ইসলাম গ্রহণের পর তাদের সাথে বিয়ে করা সম্পূর্ণ বৈধ।
প্রশ্ন: মুশরিক বা মূর্তিপূজারী মেয়েকে বিয়ে করা কি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধ?
উত্তর: না, বৈধ নয়। কুরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, মুশরিক বা মূর্তিপূজারী নারীদের সাথে বিয়ে করা নিষিদ্ধ যতক্ষণ না তারা ইসলাম গ্রহণ করে। আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ করো না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে’ (বাক্বারাহ ২২১)।
প্রশ্ন: ইসলাম ধর্ম পরিবর্তন না করেও হিন্দু বা অন্য ধর্মের মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখা কি বৈধ?
উত্তর: না, ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী, কোন মুসলিমের জন্য ইসলাম ধর্ম পরিবর্তন না করে অমুসলিম মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখা বা বিয়ে করা বৈধ নয়। এটি হারাম হিসেবে গণ্য হবে এবং এমন সম্পর্ককে ইসলামিক শিরোনামে কোনো বৈধতা দেওয়া হয় না।