আপনার খতিয়ানের ভুল সংশোধন করতে চাচ্ছেন? খতিয়ানে প্রায়ই অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়ে থাকে, এবং এ ধরনের করণিক ভুল সংশোধন করা বেশ জটিল হতে পারে। আজকে আমরা জানবো, কীভাবে আপনি সহজে খতিয়ানের ভুল সংশোধন করতে পারেন।
Table of Contents
Toggleজমির রেকর্ড বা খতিয়ানের ভুল সংশোধনের সহজ পদ্ধতি
জমির মূল মালিক ও দখলদার হলেও, যদি খতিয়ানে আপনার জমির মালিকানা অন্যের নামে লিপিবদ্ধ হয় অথবা কোনো করণিক ভুল থাকে, তখন আপনাকে কী করতে হবে?
১. প্রাথমিক পদক্ষেপ
The State Acquisition and Tenancy Act, 1950 এর ৪৩ ধারা ও প্রজাস্বত্ব বিধিমালা, ১৯৫৫ এর বিধি ২৩ অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত রেকর্ডের করণিক ভুল সংশোধনের ক্ষমতা রয়েছে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসি ল্যান্ড এর। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দরখাস্ত বা রিপোর্ট পাওয়ার পর পূর্ববর্তী জরিপের কাগজপত্র, প্রাথমিক খাজনা বিবরণী, কালেক্টরের দপ্তরে সংরক্ষিত খতিয়ানের কপি এবং অন্যান্য নথিপত্র পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান করবেন এবং করণিক ভুল সংশোধনের নির্দেশ দেবেন।
[rpt name=”consultation-fee”]
২. করণিক ভুলের ধরন
সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক সংশোধনযোগ্য করণিক ভুলগুলির মধ্যে রয়েছে:
- নামের ভুল
- অংশ বসানোর ভুল
- দাগসুচিতে ভুল
- রেকর্ড এবং ম্যাপের মধ্যে অমিল
- জরিপকালে বাবার মৃত্যুর কারণে সন্তানদের নামে সম্পত্তি রেকর্ড না হওয়া ইত্যাদি
৩. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
খতিয়ানের ভুল সংশোধনের জন্য নিম্নলিখিত কাগজপত্র জমা দিতে হবে:
- সর্বশেষ নামজারি, সিএস, আর.এস, এসএ, বিএস খতিয়ানের সত্যায়িত ফটোকপি বা সার্টিফাইড কপি
- সংশ্লিষ্ট মৌজার এসএ ও বিএস মৌজা ম্যাপ
- ওয়ারিশ সনদপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- মূল দলিলের ফটোকপি বা সার্টিফাইড কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- সর্বশেষ জরিপের পর থেকে ভায়া/পিট দলিল (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা পত্র
- আদালতের রায়/আদেশ/ডিক্রির সার্টিফাইড কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- বিএস জরিপের মাঠপর্চা, ডিপি খতিয়ান ইত্যাদি
৪. ফি এবং সময়সীমা
খতিয়ান সংশোধনের ফি ১১৫০ টাকা এবং সাধারণত প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে ৩০-৩৫ দিন সময় লাগে। সরকারিভাবে সংশোধনের জন্য আবেদনের সাথে ২০/- টাকার কোর্ট ফি সংযুক্ত করতে হয়।
৫. কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা
The State Acquisition and Tenancy Act, 1950 এর ১৪৯ ধারার (৪) উপধারা অনুযায়ী Board of Land Administration যে কোনো খতিয়ানে ভুল সংশোধনের আদেশ দিতে পারেন। তবে, বর্তমানে এ ক্ষমতা সরকারের পাশাপাশি ভূমি আপিল বোর্ডের অধীনে রয়েছে।
ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল সর্বশেষ জরিপে প্রকাশিত খতিয়ানের বিষয়ে আদেশ প্রদান করতে পারেন। জরিপ পরবর্তী স্বত্বলিপি গেজেটে চূড়ান্ত প্রকাশনার পর সংশোধনী দাবি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচার্য।
রেকর্ড সংশোধনের ধাপসমূহ
সেবা প্রদান পদ্ধতি (সংক্ষেপে):
খতিয়ানের করণিক ভুল সংশোধন
- আবেদন গ্রহণ এবং প্রেরণ:
- আবেদন প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট রেজিস্টারে এন্ট্রি দিয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে পাঠানো হয়।
- ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সরজমিন তদন্ত এবং রেকর্ড যাচাই করে প্রস্তাব/প্রতিবেদন উপজেলা ভূমি অফিসে প্রেরণ করেন।
- শুনানি এবং আদেশ:
- প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর বা আবেদন প্রাপ্তির পরই ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়।
- সহকারী কমিশনার (ভূমি) শুনানির তারিখ ধার্য করেন এবং আবেদনকারী ও স্বার্থসংশ্লিষ্টদের নোটিশ প্রদান করেন।
- ধার্য তারিখে শুনানি ও কাগজপত্র পরীক্ষা করে খতিয়ানের করণিক ভুল সংশোধনের আদেশ দেওয়া হয়।
- সংশোধিত খতিয়ান প্রস্তুত এবং বিতরণ:
- ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সংশোধিত খতিয়ানের ৫টি কপি প্রস্তুত করেন।
- প্রয়োজনীয় ফি আদায় সাপেক্ষে, ১টি কপি আবেদনকারীকে, ১টি মূল নথিতে, ১টি মূল খতিয়ান ভলিউমে, ১টি জেলা রেকর্ড রুমে এবং ১টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংরক্ষণের জন্য পাঠানো হয়।
- রেজিস্টার-২ হালনাগাদ করে প্রতিবেদন দাখিল করার মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
সেবা প্রাপ্তির সময়:
সাধারণত ই খতিয়ান সংশোধনের আদেশ পেতে সময় লাগে ৩০-৪৫ দিন। প্রথমে mutation land gov bd ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এখন অনলাইনের land gov bd এর মাধ্যমে জমির খতিয়ান বের করার সহজ পদ্ধতি।
প্রয়োজনীয় ফি:
- কোর্ট ফি: ২০ টাকা
- রেকর্ড সংশোধন ফি: ১০০০ টাকা
- খতিয়ান ফি (প্রতি কপি): ১০০ টাকা
সেবা প্রাপ্তির স্থান:
- উপজেলা/রাজস্ব সার্কেল ভূমি অফিস
- ইউনিয়ন ভূমি অফিস
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কর্মচারী:
- সহকারী কমিশনার (ভূমি)
- ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা
- নামজারি সহকারী
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- সর্বশেষ নামজারি ও জমাভাগ/জমা একত্রিকরণের খতিয়ান (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- মূল দলিলের ফটোকপি/সার্টিফাইড কপি
- করণিক ভুলের স্বপক্ষে প্রমাণপত্র
- হালনাগাদ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা
- আদালতের রায়/আদেশ/ডিক্রির সার্টিফাইড কপি (যদি থাকে)
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- আবেদনকারীর সদ্য তোলা এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- মনোনীত কোনো ব্যক্তি শুনানিতে থাকতে চাইলে ছবিসহ হলফনামার কপি
সেবা প্রাপ্তির শর্তাবলি:
- দাবির স্বপক্ষে প্রমাণপত্রসহ আবেদন দাখিল করা। সঠিক কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। অন্যথায় আবেদনটি রিজেক্ট হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি:
- রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০
- প্রজাস্বত্ব বিধিমালা, ১৯৫৫
- ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল, ১৯৯০
- ভূমি মন্ত্রণালয়ের ৩০ জুন ২০১৫ তারিখের ৩১.00.0000.082.04.0১৯.০৮-৫৯৮ নম্বর পরিপত্র
সেবা প্রদানে ব্যর্থ হলে প্রতিকারকারী কর্মকর্তা:
জেলা প্রশাসক / অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)
আদালতের মাধ্যমে জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের সংশোধন
জমির খতিয়ানে ভুল হলে, সেটি সংশোধন করার একটি উপায় হলো আদালতের মাধ্যমে সংশোধনের আবেদন করা। আদালতের মাধ্যমে জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের সংশোধন করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এখানে প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো:
ধাপ ১: প্রস্তুতি
- প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করুন:
- জমির মূল দলিল: জমির মালিকানার প্রমাণ হিসেবে।
- সর্বশেষ নামজারি ও জমাভাগ/জমা একত্রিকরণের খতিয়ান: বর্তমান রেকর্ডের প্রমাণ।
- হালনাগাদ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা: প্রমাণ হিসেবে যে আপনি নির্দিষ্ট জমির খাজনা পরিশোধ করেছেন।
- আদালতের রায়/আদেশ/ডিক্রি: যদি পূর্বে কোনো মামলা হয় থাকে, তার রায়/আদেশ।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি: আবেদনকারীর পরিচয় প্রমাণ।
- প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র: যা খতিয়ানের ভুল প্রমাণ করে।
ধাপ ২: আদালতে আবেদন দাখিল
- আদালতে মামলা দায়ের করুন:
- একটি আবেদনপত্র প্রস্তুত করুন যেখানে আপনার দাবি উল্লেখ করুন।
- প্রয়োজনীয় নথি এবং প্রমাণপত্র সংযুক্ত করুন।
- আদালতে মামলা দায়েরের জন্য প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করুন।
- আদালতের নথিপত্রে আপনার আবেদন নিবন্ধিত হবে এবং একটি মামলা নম্বর প্রদান করা হবে।
ধাপ ৩: শুনানি
- শুনানির জন্য প্রস্তুতি নিন:
- আদালতে শুনানির দিন ধার্য হবে এবং আদালত থেকে নোটিশ পাঠানো হবে।
- আপনার আইনজীবী সঙ্গে সব প্রমাণপত্র এবং নথি নিয়ে শুনানিতে উপস্থিত হন।
- আদালতে আপনার বক্তব্য উপস্থাপন করুন এবং সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিন।
- স্বাক্ষী ও প্রমাণ উপস্থাপন:
- প্রয়োজন হলে স্বাক্ষী নিয়ে আসুন যারা আপনার দাবির পক্ষে সাক্ষ্য দেবে।
- আদালতে সমস্ত প্রমাণ উপস্থাপন করুন যা খতিয়ানের ভুল প্রমাণ করে।
ধাপ ৪: আদালতের আদেশ
- আদালতের রায় প্রাপ্তি:
- আদালত সমস্ত প্রমাণ এবং যুক্তি পর্যালোচনা করে রায় প্রদান করবে।
- যদি আদালত আপনার পক্ষে রায় দেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট জমির রেকর্ড বা খতিয়ান সংশোধনের আদেশ দেবেন।
ধাপ ৫: সংশোধিত রেকর্ড সংগ্রহ
- সংশোধিত রেকর্ড সংগ্রহ করুন:
- আদালতের আদেশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে যান।
- প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করুন এবং সংশোধিত খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করুন।
- সংশোধিত রেকর্ডে আপনার নাম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে কিনা তা যাচাই করুন।
আদালতের মাধ্যমে জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের সংশোধন একটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া হলেও এটি নিশ্চিতভাবে কার্যকর একটি পদ্ধতি। সঠিক প্রমাণপত্র এবং নথি প্রস্তুত রেখে, এবং উপযুক্ত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আপনি সহজেই জমির রেকর্ড সংশোধন করতে পারবেন। এ জন্য একটি দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনজীবীর সাহায্য নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের ভুল সংশোধনের সহজ পদ্ধতি (FAQs)
প্রশ্ন ১: খতিয়ানের ভুল সংশোধন কীভাবে করা যায়?
উত্তর: খতিয়ানের ভুল সংশোধনের জন্য আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদন করার পর সংশ্লিষ্ট রেজিস্টারে এন্ট্রি দিয়ে এটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে পাঠানো হয়, যেখানে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সরজমিনে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রেরণ করেন। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শুনানির মাধ্যমে চূড়ান্ত আদেশ দেন।
প্রশ্ন ২: খতিয়ানের ভুল সংশোধনের জন্য কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন?
উত্তর:
- সর্বশেষ নামজারি, সিএস, আর.এস, এসএ, বিএস খতিয়ানের সত্যায়িত ফটোকপি বা সার্টিফাইড কপি
- সংশ্লিষ্ট মৌজার এসএ ও বিএস মৌজা ম্যাপ
- ওয়ারিশ সনদপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- মূল দলিলের ফটোকপি বা সার্টিফাইড কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- সর্বশেষ জরিপের পর থেকে ভায়া/পিট দলিল (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা পত্র
- আদালতের রায়/আদেশ/ডিক্রির সার্টিফাইড কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- বিএস জরিপের মাঠপর্চা, ডিপি খতিয়ান ইত্যাদি
প্রশ্ন ৩: খতিয়ান সংশোধনের জন্য কত ফি প্রয়োজন?
উত্তর:
- কোর্ট ফি: ২০ টাকা
- রেকর্ড সংশোধন ফি: ১০০০ টাকা
- খতিয়ান ফি (প্রতি কপি): ১০০ টাকা
প্রশ্ন ৪: খতিয়ান সংশোধনের সময়কাল কত?
উত্তর: সাধারণত ৩০-৪৫ দিন সময় লাগে।
প্রশ্ন ৫: খতিয়ান সংশোধনের জন্য কোথায় আবেদন করতে হবে?
উত্তর:
- উপজেলা/রাজস্ব সার্কেল ভূমি অফিস
- ইউনিয়ন ভূমি অফিস
প্রশ্ন ৬: কিভাবে আমি জানবো আমার খতিয়ানের ভুল সংশোধন হয়েছে?
উত্তর: সহকারী কমিশনার (ভূমি) সংশোধিত খতিয়ানের ৫টি কপি প্রস্তুত করে, একটি কপি আবেদনকারীকে দেয়া হয়। এছাড়া মূল নথি, মূল খতিয়ান ভলিউম, জেলা রেকর্ড রুম এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংরক্ষণ করা হয়। রেজিস্টার-২ হালনাগাদ করে প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
প্রশ্ন ৭: যদি আমার খতিয়ান সংশোধন না হয়, আমি কী করতে পারি?
উত্তর: আপনি জেলা প্রশাসক / অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন প্রতিকার পেতে।
প্রশ্ন ৮: আদালতের মাধ্যমে জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের সংশোধন কীভাবে করা যায়?
উত্তর: আদালতের মাধ্যমে জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের সংশোধন করতে হলে নিম্নলিখিত ধাপ অনুসরণ করতে হবে:
- প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ
- আদালতে আবেদন দাখিল
- শুনানি
- আদালতের আদেশ
- সংশোধিত রেকর্ড সংগ্রহ
প্রশ্ন ৯: করণিক ভুলের ধরন কী কী হতে পারে?
উত্তর: সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক সংশোধনযোগ্য করণিক ভুলগুলির মধ্যে রয়েছে:
- নামের ভুল
- অংশ বসানোর ভুল
- দাগসুচিতে ভুল
- রেকর্ড এবং ম্যাপের মধ্যে অমিল
- জরিপকালে বাবার মৃত্যুর কারণে সন্তানদের নামে সম্পত্তি রেকর্ড না হওয়া ইত্যাদি
প্রশ্ন ১০: খতিয়ান সংশোধনের জন্য কি কোনো নির্দিষ্ট শর্তাবলি আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, দাবির স্বপক্ষে প্রমাণপত্রসহ আবেদন দাখিল করতে হবে। অন্যথায় আবেদনটি রিজেক্ট হতে পারে।
প্রশ্ন ১১: খতিয়ান সংশোধনের জন্য অনলাইনে কোথায় আবেদন করা যায়?
উত্তর: খতিয়ান সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে mutation land gov bd ওয়েবসাইটে।
প্রশ্ন ১২: সংশোধনের জন্য কোন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে হবে?
উত্তর:
- সহকারী কমিশনার (ভূমি)
- ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা
- নামজারি সহকারী
প্রশ্ন ১৩: কীভাবে শুনানির তারিখ জানা যাবে?
উত্তর: সহকারী কমিশনার (ভূমি) শুনানির তারিখ ধার্য করেন এবং আবেদনকারী ও স্বার্থসংশ্লিষ্টদের নোটিশ প্রদান করেন।
প্রশ্ন ১৪: শুনানির সময় কী কী প্রয়োজন হতে পারে?
উত্তর:
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- সদ্য তোলা এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র ও নথি
- প্রয়োজন হলে স্বাক্ষী নিয়ে আসা
প্রশ্ন ১৫: আদালতে জমির রেকর্ড সংশোধনের খরচ কত হতে পারে?
উত্তর: আদালতে জমির রেকর্ড সংশোধনের খরচ নির্ভর করে মামলার জটিলতা এবং আদালতের ফি-এর উপর। এটি সাধারণত স্থানীয় নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।
প্রশ্ন ১৬: কিভাবে আমি জানতে পারবো যে খতিয়ানের ভুল সংশোধন হয়েছে?
উত্তর: সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস থেকে সংশোধিত খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করতে হবে। খতিয়ানে আপনার নাম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে কিনা তা যাচাই করুন।
প্রশ্ন ১৭: খতিয়ান সংশোধনের প্রক্রিয়াটি কীভাবে সম্পন্ন হয়?
উত্তর:
- আবেদন গ্রহণ এবং প্রেরণ
- সরজমিন তদন্ত ও রেকর্ড যাচাই
- সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক শুনানি এবং আদেশ
- সংশোধিত খতিয়ান প্রস্তুত এবং বিতরণ
- রেজিস্টার-২ হালনাগাদ করে প্রতিবেদন দাখিল
প্রশ্ন ১৮: খতিয়ানের ভুল সংশোধনের আদেশ পেতে কত সময় লাগে?
উত্তর: সাধারণত ৩০-৪৫ দিন সময় লাগে।
প্রশ্ন ১৯: যদি আবেদনটি রিজেক্ট হয়, তাহলে কী করতে হবে?
উত্তর: আবেদনটি রিজেক্ট হলে, আপনি জেলা প্রশাসক / অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন প্রতিকার পেতে।
প্রশ্ন ২০: জরুরি ক্ষেত্রে দ্রুত খতিয়ান সংশোধন করা সম্ভব কি?
উত্তর: বিশেষ ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দ্রুত খতিয়ান সংশোধন করা যেতে পারে।
এছাড়াও, খতিয়ানের ভুল সংশোধনের জন্য সঠিক প্রমাণপত্র ও নথি প্রস্তুত রেখে এবং উপযুক্ত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কাজটি সহজে সম্পন্ন করা যায়।