জাল দলিল বাতিলের নিয়ম : পূর্নাঙ্গ গাইডলাইন

বর্তমানে প্রতারণার মাধ্যমে পরের সম্পত্তি নিজের নামে দলিল করে নেওয়ার ঘটনা অহরহই ঘটছে। এতে প্রকৃত মালিকদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। কিছু অসাধু ব্যক্তি নানা কৌশলে জাল দলিল তৈরি করে থাকেন, যার ভুক্তভোগী হচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তবে আইনি মোকাবিলার পথ জানা থাকলে এমন প্রতারণা থেকে সহজেই রক্ষা পাওয়া যায়।

জাল দলিল হল একটি ভুয়া বা মিথ্যা দলিল, যা সম্পত্তি বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্রান্ত তথ্যকে মিথ্যা ভিত্তিতে উপস্থাপন করে। বাংলাদেশে জাল দলিল একটি গুরুতর সমস্যা এবং অনেক মানুষ এই সমস্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে এবং জাল দলিল বাতিল করার সঠিক উপায় জানতে হলে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন।

প্রমাণ সংগ্রহ

প্রথম ধাপে, জাল দলিলটি যে সত্যিই জাল তা প্রমাণ করার জন্য আপনাকে যথাযথ প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন ডকুমেন্ট, সাক্ষী, এবং অন্য যেকোনো ধরনের তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন যা আপনার দাবিকে সমর্থন করে।

[rpt name=”consultation-fee”]

জাল দলিল বাতিলের প্রাথমিক ধাপ

জাল দলিল সম্পর্কে অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা বাতিলের জন্য আপনাকে দেওয়ানি আদালতে মামলা করতে হবে। দেওয়ানি আদালতে মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া নিম্নরূপ:

  1. মামলা দায়ের: তামাদি আইনের প্রথম তফসিলের ৯১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাল দলিল তৈরি সম্পর্কে জানার তিন বছরের মধ্যে আপনাকে মামলা করতে হবে।
  2. বিচারক ও সমন: দেওয়ানি আদালতে মামলা দায়ের করা হলে বিচারক বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করবেন এবং বিস্তারিত শুনে সাক্ষীর মাধ্যমে মামলার নিষ্পত্তি করবেন।
  3. প্রমাণ: এ ক্ষেত্রে জাল দলিলটি আদালতে উপস্থাপন করে ভুয়া প্রমাণ করতে হবে।

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের অধীনে মামলা

জাল দলিল বাতিলে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের বিধান অনুযায়ী দেওয়ানি আদালতে মামলা করা যায়। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৪০ ধারা অনুসারে দলিল আংশিক বাতিলের মামলাও করা যাবে। দলিল বাতিলের সঙ্গে সম্পত্তির দখল পাওয়ার মামলাও করা যেতে পারে।

আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন

আদালত দলিল বাতিলের আদেশ বা রায় দিলে, ডিক্রির একটি কপি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে পাঠাতে হবে। এরপর সেই কপির আলোকে রেজিস্ট্রি অফিস দলিল বাতিলের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বালাম বইতে লিপিবদ্ধ করে রাখবে।

কোর্ট ফি

দলিল বাতিলের মামলায় কোর্ট ফি আইনের দ্বিতীয় তফসিলের ১৭(৩) অনুচ্ছেদে বর্ণিত কোর্ট ফি দিতে হবে। যার স্বার্থ আছে, তিনিই কেবল দলিল বাতিলের মামলা করতে পারবেন।

ফৌজদারি আদালতে মামলা

জাল দলিল তৈরিকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আদালতে দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৪৬৩-৪৭৩ ধারায় মামলা করা যায়। বিচারক চাইলে সেই মামলা সরাসরি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিতে পারেন। এছাড়া মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাঠাতে পারেন। তদন্তে দলিল ভুয়া প্রমাণিত হলে আসামিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দিতে পারবেন আদালত।

যেক্ষেত্রে জমির দলিল জাল হতে পারে

জমির দলিল জাল হওয়ার নানা কৌশল রয়েছে, যা সচেতন না থাকলে বুঝতে পারা কঠিন। নিচে জমির দলিল জাল হওয়ার বিভিন্ন ক্ষেত্র ও উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে:

১. আত্মীয়স্বজনের প্রতারণা

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আত্মীয়স্বজন নিজেরা তাদের ভাগ বাড়িয়ে নিতে সম্পত্তি জাল করে থাকে। যেমন, এজমালি সম্পত্তি অর্থাৎ ভাইবোন মিলে যে সম্পত্তি ভোগ করে থাকে, এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ভাইয়েরা বোনদের না জানিয়ে বাটোয়ারা দলিল তাদের নামেই করিয়ে থাকে। মালিকানা ছাড়াই দলিলদাতা সেজে বা কাউকে মালিক সাজিয়ে জমি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হয়। অনেক সময় অপির্ত সম্পত্তি বা মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি জীবিত দেখিয়ে জাল করা হয়।

২. প্রতিবেশীর বিরোধ

আশপাশের প্রতিবেশীর সঙ্গে জমির বিরোধ থাকলেও জমি জাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জমি নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদ থাকলে, তারা সুযোগ নিয়ে জমির দলিল জাল করতে পারে।

৩. আদালত থেকে বণ্টননামা সম্পন্ন না করা

সাধারণত যেসব ক্ষেত্রে আদালত থেকে বণ্টননামা সম্পন্ন করা হয় না, সে ক্ষেত্রে দলিল জালের সম্ভাবনা বেশি থাকে। আদালতের মাধ্যমে সম্পত্তি বণ্টনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করলে অসাধু ব্যক্তি এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে।

৪. বিদেশে থাকা মালিক

মালিক বিদেশে থাকলে মূল দলিল থেকে জালিয়াতি করা হতে পারে। এই ক্ষেত্রে, স্থানীয় অসাধু লোকজন মালিকের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে দলিল জাল করে।

৫. ঘষামাজা ও ওভাররাইটিং

অনেক সময় বিশেষ উপায়ে ঘষামাজা করে এবং ওভাররাইটিং বা কাটাছেঁড়া করেও দলিল জাল করা যেতে পারে। পুরনো দলিলে কাটাছেঁড়া করে বা নতুন তথ্য যোগ করে দলিলকে জাল বানানো হয়।

৬. মূল তারিখ ঠিক রেখে জালিয়াতি

মূল তারিখ ঠিক রেখে দলিলের বিষয়বস্তুও জাল করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে তারিখের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিষয়বস্তু পরিবর্তন করা হয় যাতে জালিয়াতি ধরা না পড়ে।

জাল দলিল চেনার উপায়

কোনো দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষণ করা দলিলের সঙ্গে সাল মিলিয়ে দেখতে পারেন। এর জন্য নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করতে হবে এবং দলিলটির যাবতীয় তথ্য দিতে হবে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের প্রকৃতি অনুযায়ী চারটি রেজিস্ট্রার বা ভলিউমে সংরক্ষিত থাকে। এছাড়াও বিক্রেতার কাছ থেকে সব দলিল, বিশেষ করে বায়া দলিল চেয়ে নিতে হবে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জানতে হবে সব দলিলের ক্রমিক নম্বর এবং দলিল নম্বর ঠিক আছে কিনা।

জমির দলিল জাল হওয়ার ঘটনা কমাতে সচেতনতা এবং সঠিক তথ্য যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের তথ্য এবং দলিলের বিস্তারিত যাচাই করে সঠিক দলিল নিশ্চিত করা যায়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নেওয়া

জাল দলিল সংক্রান্ত কোনো অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলে, আপনি স্থানীয় থানায় এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) দায়ের করতে পারেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করবে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

গণমাধ্যমের সাহায্য

গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ করা হতে পারে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ। সংবাদপত্র, টেলিভিশন, এবং অনলাইন মিডিয়ার সাহায্যে আপনি বিষয়টি জনগণের নজরে আনতে পারেন, যা প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীর পরামর্শ

একজন শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা আপনাকে সঠিক আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিতে পারবেন এবং মামলা জেতার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারেন

উপসংহার

জাল দলিল একটি গুরুতর সমস্যা হলেও সঠিক আইনি প্রক্রিয়া মেনে চললে আপনি প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে পারেন। দেওয়ানি এবং ফৌজদারি আদালতে সঠিকভাবে মামলা দায়ের এবং প্রমাণ উপস্থাপন করে আপনি আপনার সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেন। সতর্কতা এবং আইনগত সচেতনতা এই সমস্যার মোকাবিলার মূল চাবিকাঠি।

 

জাল দলিল বাতিল করা একটি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া হতে পারে। তবে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি সংগ্রহ করে, আপনি জাল দলিল বাতিল করতে সক্ষম হবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, এবং আদালতের সাথে সমন্বয় করে কাজ করলে, এই সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব। সর্বোপরি, সতর্কতা ও সচেতনতা হলো জাল দলিল সমস্যার মূলমন্ত্র।

 

FAQs: জমির দলিল জাল হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

১. জমির দলিল জাল কীভাবে করা হয়?

জমির দলিল জাল করা হয় মূলত বিভিন্ন উপায়ে, যেমন আত্মীয়স্বজনের প্রতারণা, প্রতিবেশীর বিরোধ, আদালত থেকে বণ্টননামা সম্পন্ন না করা, মালিক বিদেশে থাকা, ঘষামাজা ও ওভাররাইটিং, এবং মূল তারিখ ঠিক রেখে বিষয়বস্তু জালিয়াতি করে।

২. আত্মীয়স্বজন কীভাবে জমির দলিল জাল করে?

আত্মীয়স্বজন নিজেদের ভাগ বাড়ানোর জন্য সম্পত্তি জাল করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ভাইবোন মিলে যে সম্পত্তি ভোগ করে, সেই সম্পত্তি ভাইরা বোনদের না জানিয়ে তাদের নামেই বাটোয়ারা দলিল করিয়ে থাকে।

৩. প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধ থাকলে দলিল জাল হওয়ার সম্ভাবনা কেন থাকে?

প্রতিবেশীর সঙ্গে জমির বিরোধ থাকলে তারা সুযোগ নিয়ে জমির দলিল জাল করতে পারে। এই ক্ষেত্রে জমির মালিকের অনুপস্থিতির সুযোগ নেওয়া হয়।

৪. দলিল জালিয়াতি থেকে কীভাবে নিরাপদ থাকা যায়?

দলিল জালিয়াতি থেকে নিরাপদ থাকতে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের তথ্য যাচাই করতে হবে, বিক্রেতার কাছ থেকে সমস্ত দলিল চেয়ে নিতে হবে, এবং সন্দেহ হলে রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষিত দলিলের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে।

৫. আদালতে জমির দলিল বাতিলের জন্য কীভাবে মামলা করতে হয়?

জাল দলিল বাতিলের জন্য দেওয়ানি আদালতে মামলা করতে হবে। তামাদি আইনের প্রথম তফসিলের ৯১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাল দলিল তৈরি সম্পর্কে জানার তিন বছরের মধ্যে এ মামলা করা যাবে।

৬. জাল দলিলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা কীভাবে করা যায়?

জাল দলিল তৈরিকারীদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৪৬৩-৪৭৩ ধারায় ফৌজদারি মামলা করা যায়। বিচারক চাইলে সেই মামলা সরাসরি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিতে পারেন।

৭. দলিল জালিয়াতির বিরুদ্ধে আদালতের আদেশ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হয়?

আদালত দলিল বাতিলের আদেশ বা রায় দিলে, ডিক্রির একটি কপি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে পাঠাতে হবে। এরপর রেজিস্ট্রি অফিস দলিল বাতিলের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বালাম বইতে লিপিবদ্ধ করে রাখবে।

৮. জমির দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে কী করবেন?

জমির দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষিত দলিলের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে। এর জন্য নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করতে হবে এবং দলিলটির যাবতীয় তথ্য দিতে হবে। এছাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে দলিলের ক্রমিক নম্বর ও দলিল নম্বর ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করতে হবে।

৯. জমির মালিক বিদেশে থাকলে কীভাবে দলিল জাল হতে পারে?

যখন জমির মালিক বিদেশে থাকেন, তখন স্থানীয় অসাধু ব্যক্তিরা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মূল দলিল থেকে জালিয়াতি করতে পারে। তারা মালিকের উপস্থিতি বা সম্মতি ছাড়াই জমি অন্য কারো নামে রেজিস্ট্রি করে নিতে পারে।

১০. ঘষামাজা ও ওভাররাইটিং দ্বারা দলিল কীভাবে জাল হয়?

দলিলের তথ্য ঘষামাজা বা ওভাররাইটিং করে জাল করা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পুরনো দলিলের তথ্য পরিবর্তন করে বা নতুন তথ্য যোগ করে দলিলকে ভুয়া বানানো হয়।

১১. জাল দলিল চেনার সহজ উপায় কী কী?

জাল দলিল চেনার জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষণ করা দলিলের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। দলিলের সাল, ক্রমিক নম্বর, দলিল নম্বর ইত্যাদি যাচাই করা উচিত। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করে দলিলের যাবতীয় তথ্য মিলিয়ে দেখতে হবে।

১২. দলিল জালিয়াতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?

দলিল জালিয়াতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দলিলের তথ্য সাবধানে যাচাই করা, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের তথ্য মিলিয়ে দেখা, এবং বিক্রেতার কাছ থেকে সমস্ত প্রয়োজনীয় দলিল চেয়ে নেওয়া উচিত। এ ছাড়া সম্পত্তির দখল নিশ্চিত করার জন্য সময়মত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

১৩. দলিল জালিয়াতির শাস্তি কী হতে পারে?

দলিল জালিয়াতির শাস্তি দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৪৬৩-৪৭৩ ধারায় উল্লেখিত। আদালতে প্রমাণিত হলে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে।

১৪. কোর্ট ফি কত দিতে হয় দলিল বাতিলের মামলায়?

দলিল বাতিলের মামলায় কোর্ট ফি আইনের দ্বিতীয় তফসিলের ১৭(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। যার স্বার্থ আছে, তিনিই কেবল দলিল বাতিলের মামলা করতে পারবেন এবং সেই অনুযায়ী কোর্ট ফি দিতে হবে।

১৫. বাটোয়ারা দলিল সম্পন্ন না হলে কী সমস্যা হতে পারে?

আদালত থেকে বাটোয়ারা দলিল সম্পন্ন না হলে দলিল জাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে সম্পত্তি সঠিকভাবে ভাগ না হলে অসাধু ব্যক্তি এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলিল জাল করতে পারে।

১৬. জাল দলিলের বিরুদ্ধে মামলা করার সময় কী কী প্রমাণ সংগ্রহ করা উচিত?

জাল দলিলের বিরুদ্ধে মামলা করার সময় দলিলের সকল তথ্য, বিক্রেতার দলিল, সাক্ষ্য, এবং অন্য যেকোনো প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহ করা উচিত। এ ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দেওয়া দলিলের তথ্যও সংগ্রহ করতে হবে।

১৭. জাল দলিল বাতিল করার পর কীভাবে সম্পত্তির দখল নিশ্চিত করা যায়?

জাল দলিল বাতিল করার পর সম্পত্তির দখল নিশ্চিত করার জন্য আদালতে সম্পত্তি দখলের মামলা দায়ের করতে হবে। আদালতের রায় পাওয়ার পর সম্পত্তির দখল নিতে পারেন।

১৮. সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাহায্য কীভাবে নেওয়া যায়?

সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করে দলিলের যাবতীয় তথ্য যাচাই করা যায়। রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষিত দলিলের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে নিশ্চিত হতে পারেন দলিলের সঠিকতা।

Share  This Article Now

Contact info:
Advocate Rashed CEO Spark Advocates
Adv. Rashedujjaman Rashed
Plot 299, Ward 2, Koya Golahat, 1st Floor Opposite Golahat Puraton Mosque, Saidpur