মামলা প্রত্যাহারের নিয়ম

মামলা দায়ের করার পরে তা প্রত্যাহার করা যায় কিনা, তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে। এই ব্লগে আমরা আলোচনা করব, কোন পরিস্থিতিতে মামলা প্রত্যাহার করা যায় এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

মামলা দায়েরের পর কি প্রত্যাহার করা যায়?

হ্যাঁ, মামলা দায়েরের পর মামলা প্রত্যাহার করা যায়। তবে এটি নির্ভর করে মামলার ধরণ এবং আদালতের নিয়ম-কানুনের উপর। নিচে কিছু সাধারণ দিকনির্দেশনা দেওয়া হলো:

  1. ফৌজদারি মামলা (Criminal Case):
    • সাধারণ অপরাধ: সাধারণত, বিচারের আগে বা বিচারের সময় বাদী পক্ষ মামলা প্রত্যাহার করতে পারে যদি অপরাধটি আপোষযোগ্য (compoundable) হয়। উদাহরণস্বরূপ, অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বা ছোটখাট অপরাধগুলো আপোষযোগ্য হয়।
    • গুরুতর অপরাধ: গুরুতর অপরাধগুলো সাধারণত আপোষযোগ্য নয় এবং আদালতের অনুমোদন ছাড়া এসব মামলা প্রত্যাহার করা যায় না।
  2. দেওয়ানী মামলা (Civil Case):
    • দেওয়ানী মামলায়, বাদী আদালতে একটি দরখাস্ত দাখিল করে মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। আদালত এই বিষয়ে অনুমোদন দিলে মামলা প্রত্যাহার করা হবে।
  3. বিশেষ মামলা:
    • পারিবারিক বা পারস্পরিক সমঝোতা সংক্রান্ত মামলাগুলো সাধারণত সহজে প্রত্যাহার করা যায় যদি দুই পক্ষ সম্মত হয়।

মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং সঠিক পরামর্শের জন্য আপনার আইনজীবীর সাথে আলোচনা করা উচিত। আদালতের নিয়ম ও ধারা পরিবর্তিত হতে পারে এবং সেগুলো বুঝে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

বেসিক
২৯৯/ টাকা
প্রাথমিক আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব
অনলাইন/অপারেটর কল: ১০ মিনিট (সর্বোচ্চ)
অনলাইন বার্তা- উপলদ্ধ
ভিডিও পরামর্শ- উপলদ্ধ নয়
যোগাযোগ
প্রিমিয়াম
৪৯৯/ টাকা
প্রাথমিক আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব
অনলাইন/অপারেটর কল: ৩০ মিনিট (সর্বোচ্চ)
অনলাইন বার্তা- উপলদ্ধ
ভিডিও পরামর্শ- উপলদ্ধ নয়
যোগাযোগ
গোল্ড
৯৯৯/ টাকা
প্রাথমিক আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব
অনলাইন/অপারেটর কলঃ আনলিমিটেড (৭ দিন)
অনলাইন বার্তা- উপলদ্ধ
ভিডিও পরামর্শ- উপলদ্ধ
যোগাযোগ

ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার

ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন এবং শর্তাবলী রয়েছে যা অনুসরণ করতে হয়। নিম্নলিখিত ধাপগুলো সাধারণত ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত:

১. আপোষযোগ্য এবং আপোষযোগ্য নয় এমন মামলা:

  • আপোষযোগ্য মামলা: কিছু ফৌজদারি মামলা আইন অনুসারে আপোষযোগ্য (compoundable) হিসেবে গণ্য হয়। এসব মামলায় বাদী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, ধারা ৩২০, দণ্ডবিধি (Penal Code) বিভিন্ন অপরাধ নির্ধারণ করে যা আপোষযোগ্য।
  • আপোষযোগ্য নয় এমন মামলা: গুরুতর অপরাধ যেমন খুন, ধর্ষণ ইত্যাদি আপোষযোগ্য নয় এবং এগুলো সাধারণত আদালতের অনুমতি ছাড়া প্রত্যাহার করা যায় না।

২. আদালতের অনুমোদন:

  • মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতের অনুমোদন প্রয়োজন। বাদী পক্ষ একটি দরখাস্ত (petition) আদালতে দাখিল করে এবং আদালত যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেয় যে, মামলা প্রত্যাহার করা যাবে কিনা।

৩. মামলার অবস্থা:

  • মামলা যদি এখনও বিচারাধীন থাকে, তবে বাদী পক্ষ আদালতে দরখাস্ত করে মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন।
  • যদি মামলা শেষ পর্যায়ে থাকে বা রায় ঘোষণা হয়ে থাকে, তবে মামলা প্রত্যাহার করা জটিল হতে পারে এবং আদালতের বিশেষ অনুমোদন প্রয়োজন।

৪. দরখাস্ত জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া:

  • বাদী পক্ষ আদালতে একটি দরখাস্ত জমা দেয়, যেখানে তারা উল্লেখ করে কেন তারা মামলা প্রত্যাহার করতে চান। এই দরখাস্তে অভিযুক্তের সাথে সমঝোতার বিষয়টি বর্ণিত থাকতে পারে।
  • আদালত দরখাস্তের শুনানি নির্ধারণ করে এবং দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

৫. সরকারি মামলা:

  • কিছু ক্ষেত্রে সরকারী অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা মামলায় বাদী পক্ষ সরাসরি মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন না। এই ধরনের মামলায় সরকারি আইনজীবীর মতামত এবং আদালতের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।

৬. শর্তসাপেক্ষ প্রত্যাহার:

  • আদালত যদি মনে করে যে, সমঝোতার ভিত্তিতে মামলা প্রত্যাহার হওয়া উচিত, তবে তা শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন করতে পারে।

ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াটি জটিল হতে পারে এবং আইনগত পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরি। এজন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সহযোগিতা নেয়া সর্বদা উত্তম।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহার

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির (Public Prosecutor) পক্ষ থেকে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করার বিষয়টি আইন অনুসারে বিশেষ প্রক্রিয়া ও শর্তসাপেক্ষে সম্পন্ন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (PP) মামলা প্রত্যাহারের জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হয়:

১. আইনি ভিত্তি:

  • ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) ধারা ৩২১ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আদালতের অনুমোদন নিয়ে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন।

২. আদালতের অনুমতি:

  • রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আদালতে একটি আবেদন জমা দেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন কেন তিনি মামলা প্রত্যাহার করতে চান।
  • আদালত রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির আবেদনটি পর্যালোচনা করে এবং উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

৩. মামলা প্রত্যাহারের কারণ:

  • মামলা প্রত্যাহারের কারণ যথার্থ এবং ন্যায্য হতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি মামলার প্রমাণ অপর্যাপ্ত হয়, অথবা মামলার চলমান অবস্থা যদি জনস্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হয়, তাহলে আদালত মামলা প্রত্যাহারের অনুমোদন দিতে পারে।

৪. শুনানি:

  • আদালত একটি শুনানি নির্ধারণ করে যেখানে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এবং অন্য পক্ষের বক্তব্য শুনে।
  • অভিযুক্তের উপস্থিতি ও বক্তব্য এই শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

৫. আদালতের সিদ্ধান্ত:

  • আদালত সমস্ত প্রমাণ ও বক্তব্য বিবেচনা করে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর বা বাতিল করতে পারে।
  • যদি আদালত মনে করে যে মামলা প্রত্যাহার করা জনস্বার্থে নয়, তাহলে আদালত আবেদনটি বাতিল করতে পারে।

৬. প্রভাব:

  • মামলা প্রত্যাহার করা হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অভিযোগ থাকবে না, এবং তারা মুক্তি পাবে।

উদাহরণ:

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি যদি মনে করেন যে:

  • মামলা চালানো জনস্বার্থের পরিপন্থী,
  • অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই,
  • মামলার সাথে সম্পর্কিত সাক্ষ্য বা প্রমাণ মিথ্যা বা ত্রুটিপূর্ণ,
  • অথবা অন্যান্য কোনো ন্যায্য কারণে মামলা প্রত্যাহার করা উচিত,

তাহলে তিনি আদালতের কাছে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে পারেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মামলা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এবং আদালতের অনুমোদন পাওয়ার জন্য যথাযথ কারণ ও যুক্তি প্রদান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নালিশি (সিআর) মামলা প্রত্যাহার

নালিশি (Complaint Register – CR) মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও শর্তসাপেক্ষে সম্পন্ন হয়। নালিশি মামলা সাধারণত দেওয়ানি (Civil) এবং ফৌজদারি (Criminal) মামলার মধ্যে পড়ে। এখানে ফৌজদারি নালিশি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১. আপোষযোগ্য মামলা (Compoundable Offenses):

নালিশি মামলা যদি আপোষযোগ্য হয়, তাহলে বাদী পক্ষ ও অভিযুক্ত পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। আপোষযোগ্য অপরাধের তালিকা ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) ধারা ৩২০-এ উল্লেখিত আছে।

২. আদালতের অনুমতি:

  • বাদী পক্ষ আদালতে একটি দরখাস্ত দাখিল করে এবং উল্লেখ করে কেন তারা মামলা প্রত্যাহার করতে চান।
  • আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে এবং যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেয়।

৩. দরখাস্ত জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া:

  • বাদী পক্ষ একটি দরখাস্ত (Withdrawal Petition) আদালতে জমা দেয়, যেখানে তারা মামলাটি প্রত্যাহারের কারণ উল্লেখ করেন।
  • আদালত একটি শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে এবং উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে।

৪. শুনানি:

  • আদালত শুনানির সময় বাদী এবং অভিযুক্তের বক্তব্য শুনে।
  • যদি আদালত মনে করে যে, মামলা প্রত্যাহার করা জনস্বার্থে এবং ন্যায়বিচার সম্পন্নের জন্য সঠিক, তবে আদালত মামলাটি প্রত্যাহারের অনুমোদন দেয়।

৫. আদালতের সিদ্ধান্ত:

  • আদালত সমস্ত প্রমাণ ও বক্তব্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
  • আদালত যদি মনে করে যে মামলা প্রত্যাহার করা ন্যায্য ও যথাযথ, তাহলে আদালত মামলাটি প্রত্যাহার করবে।

উদাহরণ:

  • পারিবারিক বিরোধ: পারিবারিক বিরোধের ক্ষেত্রে যদি দুই পক্ষ পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সম্মত হয়, তাহলে তারা মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করতে পারেন।
  • ব্যক্তিগত আক্রমণ: ছোটখাট ব্যক্তিগত আক্রমণ বা অপমানের মামলাগুলো আপোষযোগ্য হতে পারে এবং সমঝোতার মাধ্যমে প্রত্যাহার করা যেতে পারে।

৬. বিশেষ মামলা:

  • গুরুতর অপরাধ যেমন খুন, ধর্ষণ, বড় ধরনের অর্থপাচার ইত্যাদি ক্ষেত্রে নালিশি মামলা সাধারণত আপোষযোগ্য নয় এবং আদালতের বিশেষ অনুমোদন ছাড়া প্রত্যাহার করা যায় না।

পরামর্শ:

মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া এবং আদালতের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও সঠিক পরামর্শের জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে আলোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইনজীবী আপনাকে সঠিক নিয়ম এবং প্রক্রিয়া অনুসরণে সহায়তা করতে পারবেন।

 

দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহার করা হলে তা সাধারণত আদালতের অনুমোদন প্রাপ্তির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এখানে দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া ও নিয়মাবলী সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

১. মামলা প্রত্যাহারের কারণ:

দেওয়ানি মামলা বিভিন্ন কারণে প্রত্যাহার করা যেতে পারে, যেমন:

  • পক্ষগুলো পারস্পরিক সমঝোতায় পৌঁছেছে।
  • বাদী মামলা চালাতে অনিচ্ছুক।
  • মামলার আর কোন আইনি ভিত্তি নেই।

২. দরখাস্ত জমা দেওয়া:

বাদী আদালতে একটি দরখাস্ত (Withdrawal Petition) দাখিল করেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন কেন তিনি মামলা প্রত্যাহার করতে চান।

৩. শুনানি:

  • আদালত একটি শুনানি নির্ধারণ করে।
  • শুনানিতে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

৪. আদালতের সিদ্ধান্ত:

  • আদালত সমস্ত প্রমাণ ও বক্তব্য বিবেচনা করে।
  • আদালত যদি মনে করে যে মামলা প্রত্যাহার করা ন্যায্য এবং আইনানুগ, তাহলে আদালত মামলাটি প্রত্যাহারের অনুমতি দেয়।

দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহারের ধাপসমূহ:

ধাপ ১: দরখাস্ত প্রস্তুত করা

  • বাদী একটি দরখাস্ত প্রস্তুত করেন যেখানে তিনি বিস্তারিত উল্লেখ করেন কেন তিনি মামলা প্রত্যাহার করতে চান।
  • এই দরখাস্তে মামলার বিবরণ, পক্ষগুলোর তথ্য এবং প্রত্যাহারের কারণ উল্লেখ করতে হয়।

ধাপ ২: দরখাস্ত দাখিল করা

  • দরখাস্তটি সংশ্লিষ্ট আদালতে দাখিল করতে হবে।
  • দরখাস্তের সাথে প্রয়োজনীয় ফি জমা দিতে হতে পারে।

ধাপ ৩: শুনানি

  • আদালত দরখাস্তের শুনানির জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করে।
  • শুনানিতে বাদী ও অন্যান্য পক্ষ উপস্থিত থাকে এবং আদালত তাদের বক্তব্য শোনে।

ধাপ ৪: আদালতের আদেশ

  • আদালত যদি দরখাস্ত গ্রহণ করে, তাহলে একটি আদেশ জারি করে।
  • আদেশে উল্লেখ থাকবে যে মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

কিছু বিশেষ দিক:

  • আংশিক প্রত্যাহার: বাদী যদি মামলা আংশিক প্রত্যাহার করতে চান, তবে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন।
  • ব্যাপক সমঝোতা: যদি দুই পক্ষ ব্যাপক সমঝোতায় পৌঁছায়, তবে মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সহজ হয়।

উদাহরণ:

  1. পারিবারিক বিরোধ: পারিবারিক বিরোধে দুই পক্ষ পারস্পরিক সমঝোতায় পৌঁছালে মামলাটি প্রত্যাহার করা যেতে পারে।
  2. সম্পত্তি বিরোধ: সম্পত্তি বিরোধের ক্ষেত্রে যদি উভয় পক্ষ সমঝোতা করে, তবে মামলাটি প্রত্যাহার করা যায়।

পরামর্শ:

দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক তথ্য ও সহায়তার জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইনজীবী আপনার মামলার ধরন ও পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করতে পারেন।

 

নিচে দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহার সম্পর্কিত সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তর (FAQs) দেয়া হলো যা আপনাকে প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দেবে:

FAQs: দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহার

প্রশ্ন ১: দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহার কি?

উত্তর: দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহার হলো বাদী পক্ষের দ্বারা আদালতে দায়ের করা মামলা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বন্ধ করা বা প্রত্যাহার করা। এটি সাধারণত পারস্পরিক সমঝোতা, অনিচ্ছা, বা মামলার ভিত্তি না থাকার কারণে করা হয়ে থাকে।

প্রশ্ন ২: দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া কি?

উত্তর:

  1. বাদী পক্ষ একটি দরখাস্ত (Withdrawal Petition) তৈরি করে।
  2. দরখাস্তটি সংশ্লিষ্ট আদালতে দাখিল করা হয়।
  3. আদালত একটি শুনানি নির্ধারণ করে।
  4. আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নেয়।
  5. আদালত যদি দরখাস্ত মঞ্জুর করে, তাহলে মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়।

প্রশ্ন ৩: দেওয়ানি মামলা কি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে প্রত্যাহার করা যায়?

উত্তর: হ্যাঁ, দেওয়ানি মামলা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে প্রত্যাহার করা যেতে পারে। আংশিক প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে, বাদী শুধুমাত্র মামলার কিছু অংশ প্রত্যাহার করতে পারেন।

প্রশ্ন ৪: কি কারণে দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহার করা যেতে পারে?

উত্তর:

  • পক্ষগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা হয়েছে।
  • বাদী মামলা চালাতে অনিচ্ছুক।
  • মামলার আর কোন আইনি ভিত্তি নেই।
  • অন্যান্য যৌক্তিক কারণ।

প্রশ্ন ৫: কি আদালতের অনুমতি প্রয়োজন হয়?

উত্তর: হ্যাঁ, দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতের অনুমতি প্রয়োজন হয়। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে এবং সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রশ্ন ৬: কি প্রমাণাদি দরকার হতে পারে?

উত্তর: সাধারণত, দরখাস্তে মামলার বিবরণ, পক্ষগুলোর তথ্য এবং প্রত্যাহারের কারণ উল্লেখ করতে হয়। আদালত প্রয়োজন মনে করলে অন্যান্য প্রমাণাদি চাইতে পারে।

প্রশ্ন ৭: কি দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহারের পর পুনরায় মামলা করা যায়?

উত্তর: সাধারণত, দেওয়ানি মামলা একবার প্রত্যাহার করা হলে, পুনরায় একই বিষয়ে মামলা করা যায় না যদি না আদালত ভিন্ন নির্দেশ দেয় বা বিশেষ শর্ত থাকে।

প্রশ্ন ৮: কি আর্থিক দিক থেকে কোনো প্রভাব পড়ে?

উত্তর: দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহারের সময় বাদীকে সাধারণত আদালতের ফি এবং অন্যান্য খরচ বহন করতে হতে পারে। তবে, পক্ষগুলো সমঝোতা করে এসব খরচ ভাগাভাগি করতে পারে।

প্রশ্ন ৯: কিভাবে আইনজীবীর সহায়তা পাওয়া যায়?

উত্তর: একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করা উচিত, যিনি আপনাকে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে সাহায্য করতে পারবেন এবং সকল আইনগত পদক্ষেপ সম্পর্কে যথাযথ পরামর্শ দিতে পারবেন।

প্রশ্ন ১০: কত সময় লাগে মামলা প্রত্যাহার করতে?

উত্তর: মামলার জটিলতা, আদালতের কাজের চাপ এবং অন্যান্য বিচারিক প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে সময়ের তারতম্য হতে পারে। সাধারণত, শুনানি ও বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর মামলা প্রত্যাহার করা হয়।

প্রশ্ন ১১: কি প্রকারের দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহার করা যেতে পারে?

উত্তর: যে কোন প্রকারের দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহার করা যেতে পারে, যেমন সম্পত্তি বিরোধ, পারিবারিক বিরোধ, ঋণ সংক্রান্ত মামলা ইত্যাদি। তবে প্রত্যাহারের কারণ ও প্রক্রিয়া আদালতের নিকট যথাযথ হতে হবে।

প্রশ্ন ১২: পক্ষগুলো কি একসাথে মামলা প্রত্যাহার করতে পারে?

উত্তর: হ্যাঁ, যদি দুই পক্ষ পারস্পরিক সমঝোতায় পৌঁছায়, তাহলে তারা যৌথভাবে আদালতে দরখাস্ত জমা দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে পারে। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রশ্ন ১৩: কি বাদী একতরফাভাবে মামলা প্রত্যাহার করতে পারে?

উত্তর: বাদী একতরফাভাবে মামলা প্রত্যাহারের জন্য দরখাস্ত দাখিল করতে পারেন, তবে আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে এবং সকল দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

প্রশ্ন ১৪: মামলা প্রত্যাহারের পর কি পুনরায় সমঝোতা করা যায়?

উত্তর: মামলা প্রত্যাহারের পর সাধারণত একই বিষয় নিয়ে পুনরায় মামলা করা যায় না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে বা নতুন প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পুনরায় মামলা করা যেতে পারে।

প্রশ্ন ১৫: আদালত কি প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করতে পারে?

উত্তর: হ্যাঁ, যদি আদালত মনে করে যে মামলা প্রত্যাহার করা জনস্বার্থ বা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী, তাহলে আদালত মামলা প্রত্যাহারের আবেদন অস্বীকার করতে পারে।

প্রশ্ন ১৬: কি মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতের নির্দিষ্ট ফি রয়েছে?

উত্তর: মামলা প্রত্যাহারের জন্য সাধারণত কিছু ফি দিতে হয় যা আদালতের নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। এই ফি মামলার ধরন এবং আদালতের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।

প্রশ্ন ১৭: কি বাদী মামলা প্রত্যাহারের পর ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন?

উত্তর: সাধারণত, মামলা প্রত্যাহারের পর বাদী ক্ষতিপূরণ পান না। তবে, যদি সমঝোতার অংশ হিসেবে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা থাকে, তাহলে সেটি বাদী পেতে পারেন।

প্রশ্ন ১৮: কি দেওয়া আদালত ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে মামলা প্রত্যাহার করা যায়?

উত্তর: না, দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতের অনুমতি ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। আদালতের বাইরে অন্য কোনো উপায়ে মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়।

প্রশ্ন ১৯: কি বিশেষ পরিস্থিতিতে মামলা প্রত্যাহার করা যেতে পারে?

উত্তর: বিশেষ পরিস্থিতিতে যেমন বাদীর অসুস্থতা, পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতা, বা নতুন প্রমাণ উদ্ঘাটিত হলে মামলা প্রত্যাহার করা যেতে পারে। তবে, এসব ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি আবশ্যক।

প্রশ্ন ২০: কি মামলার শুনানি শেষ হলে মামলা প্রত্যাহার করা যায়?

উত্তর: সাধারণত মামলার শুনানি ও বিচার সম্পন্ন হওয়ার পর মামলা প্রত্যাহার করা যায় না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে এবং আদালতের অনুমতি নিয়ে এটি করা সম্ভব হতে পারে।

প্রশ্ন ২১: কি মামলা প্রত্যাহার করার পরে কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে?

উত্তর: মামলা প্রত্যাহার করার পরে সাধারণত কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে না, তবে যদি কোনো শর্ত থাকে বা সমঝোতার অংশ হিসেবে কোনো দায় থাকে, তাহলে সেটি পূরণ করতে হয়।

প্রশ্ন ২২: কি পক্ষগুলো নিজেরা মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন নাকি আইনজীবীর প্রয়োজন?

উত্তর: পক্ষগুলো নিজেরা মামলা প্রত্যাহারের দরখাস্ত করতে পারেন, তবে প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সহায়তা নেয়া উত্তম।

প্রশ্ন ২৩:মামলা দায়েরের পর কি প্রত্যাহার করা যায়?

হ্যাঁ, মামলা দায়েরের পর মামলা প্রত্যাহার করা যায়। তবে এটি নির্ভর করে মামলার ধরণ এবং আদালতের নিয়ম-কানুনের উপর।

প্রশ্ন ২৪: ফৌজদারি মামলা (Criminal Case) কি ধরনের হলে প্রত্যাহার করা যায়?

ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে সাধারণ অপরাধগুলো আপোষযোগ্য হলে বাদী পক্ষ মামলা প্রত্যাহার করতে পারে। গুরুতর অপরাধগুলোর ক্ষেত্রে আদালতের অনুমোদন ছাড়া মামলা প্রত্যাহার করা যায় না।

প্রশ্ন ২৫:দেওয়ানী মামলা (Civil Case) কি ধরনের হলে প্রত্যাহার করা যায়?

দেওয়ানী মামলায়, বাদী আদালতে একটি দরখাস্ত দাখিল করে মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। আদালত অনুমোদন দিলে মামলা প্রত্যাহার করা যাবে।

প্রশ্ন ২৬:বিশেষ মামলা কখন সহজে প্রত্যাহার করা যায়?

পারিবারিক বা পারস্পরিক সমঝোতা সংক্রান্ত মামলাগুলো সাধারণত সহজে প্রত্যাহার করা যায় যদি দুই পক্ষ সম্মত হয়।

প্রশ্ন ২৭:ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া কী?

ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়:

  1. আপোষযোগ্য এবং আপোষযোগ্য নয় এমন মামলার প্রকারভেদ নির্ধারণ।
  2. আদালতের অনুমোদন প্রাপ্তি।
  3. মামলা বিচারাধীন থাকলে দরখাস্ত জমা করা।
  4. দরখাস্তের শুনানি এবং আদালতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

প্রশ্ন ২৮:রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া কী?

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আদালতের অনুমোদন নিয়ে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। তিনি আদালতে একটি আবেদন জমা দেন এবং আদালত সমস্ত প্রমাণ ও বক্তব্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

প্রশ্ন ২৯:নালিশি (সিআর) মামলা কীভাবে প্রত্যাহার করা যায়?

নালিশি মামলা যদি আপোষযোগ্য হয়, তাহলে বাদী পক্ষ ও অভিযুক্ত পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। আদালতের অনুমোদন প্রাপ্তির জন্য দরখাস্ত জমা দিতে হয় এবং শুনানির মাধ্যমে আদালত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

Share  This Article Now

Contact info:
Advocate Rashed CEO Spark Advocates
Adv. Rashedujjaman Rashed
Plot 299, Ward 2, Koya Golahat, 1st Floor Opposite Golahat Puraton Mosque, Saidpur