কোর্ট ম্যারেজ কি? বাংলাদেশে কোর্ট ম্যারেজ এর নিয়ম, খরচঃ বিস্তারিত

কোর্ট ম্যারেজ

যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছেঃ

অংশ ১: কোর্ট ম্যারেজ কি?

কোর্ট ম্যারেজের সংজ্ঞা এবং ব্যাখ্যা

বাংলাদেশে কোর্ট ম্যারেজের নামে যা হচ্ছে তা হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে যুবক-যুবতি বা নারী-পুরুষ স্বামী-স্ত্রী হিসাবে একত্রে বসবাস করার জন্য কোর্টে অঙ্গীকার দেয়া হয়। এই পদ্ধতিতে কোন বিয়ের আইনী ভিত্তি নেই, তারা একটি হলফনামা সম্পাদন করে থাকে।

বাংলাদেশে  কোর্ট ম্যারেজ একটি প্রচলিত টার্ম হলেও আইনত এর অস্তিত্ব নেই। তবে, এটিকে মূলত বিয়ে নিবন্ধনের একটি প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কোর্ট ম্যারেজ বলতে সাধারণত বিয়ের চুক্তিপত্র তৈরি এবং সেটিকে নোটারি পাবলিক বা ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা সত্যায়িত করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।

ধর্ম পরিবর্তন না করে বিয়ে কি সম্ভব?

বিশেষ বিবাহ আইন, ১৮৭২ এর অধীনে কোর্ট ম্যারেজ 2024

কোর্ট ম্যারেজ হলো একটি প্রক্রিয়া যেখানে একটি দম্পতি বিশেষ বিবাহ রেজিস্টারের মাধ্যমে অথবা একটি হলফনামা সম্পন্ন করে তাদের বিবাহ সম্পন্ন করে এবং সরকারি রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে আইনি স্বীকৃতি পায়। এই প্রক্রিয়ায় একজন   নিকাহ রেজিস্ট্রার বা বিশেষ বিবাহ রেজিস্টার বিবাহ সম্পন্ন করেন এবং বিবাহ সনদ প্রদান করেন। এটি একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত এবং সহজ উপায়ে বিবাহ সম্পন্ন করার পদ্ধতি যা বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যক্তিগত সমস্যার সমাধান করতে সহায়ক।

আমি, অ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান রাশেদ, এই বিষয়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এবং বিশেষজ্ঞতা অর্জন করেছি। আমার কাছে আপনার কোর্ট ম্যারেজ প্রক্রিয়াকে সহজ এবং নির্ভরযোগ্যভাবে সম্পন্ন করার সকল ধরনের দক্ষতা এবং জ্ঞান রয়েছে। আমি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দম্পতির কোর্ট ম্যারেজ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের পথে প্রথম পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করে আসছি। আমার সেবা গ্রহণের মাধ্যমে আপনি একটি নিশ্চিন্ত ও আইনি সুরক্ষা প্রাপ্ত বিবাহের অভিজ্ঞতা পাবেন।

  • ফ্রি প্রাথমিক পরামর্শ:
    • যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর: +৮৮০১৭৮৫৪৬০০৮৫, +৮৮০১৩১৫১৫২৭৪৩
    • ইমেইল: sparkadvocatesbd@gmail.com
    • অফিস ঠিকানা ১:  সান্ধ্যকালীন চেম্বার- ২৯৯, গোলাহাট, সৈয়দপুর, নীলফামারি।
    • অফিস ঠিকানা ২:  কোর্ট চেম্বার- হল রুম ৩, নীলফামারি বার সমিতি ভবন, নীলফামারি।
  • অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং:

মুসলিম-অমুসলিম বিয়ে, মুসলিম-হিন্দু বিয়ে করার প্রক্রিয়া

কোর্ট ম্যারেজ এবং ঐতিহ্যবাহী বিবাহের মধ্যে পার্থক্য

কোর্ট ম্যারেজ এবং ঐতিহ্যবাহী বিবাহের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে:

  1. প্রক্রিয়া: কোর্ট ম্যারেজ সম্পন্ন হয় হলফনামা অথবা একজন বিশেষ বিবাহ রেজিস্টার এবং একটি নির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়ার অনুসরণে। অন্যদিকে, ঐতিহ্যবাহী বিবাহ সাধারণত সামাজিক এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
  2. সাক্ষী: কোর্ট ম্যারেজে সাধারণত নির্দিষ্ট সংখ্যক সাক্ষীর প্রয়োজন হয়, যারা আইনি সাক্ষী হিসেবে বিবাহ সম্পন্নের প্রমাণ প্রদান করে। ঐতিহ্যবাহী বিবাহে অনেক সময় সামাজিক ও পারিবারিক সাক্ষীর উপস্থিতি থাকে।
  3. গোপনীয়তা: কোর্ট ম্যারেজে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করা সহজ, কারণ এটি একটি সরকারি প্রক্রিয়া যা কোনো সামাজিক আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন হয় না। ঐতিহ্যবাহী বিবাহে সামাজিক এবং পারিবারিক উৎসবের অংশ হওয়ার কারণে গোপনীয়তা রক্ষা করা কঠিন হতে পারে।
  4. ব্যয়: কোর্ট ম্যারেজের খরচ সাধারণত কম হয়, কারণ এখানে বড় আকারের সামাজিক অনুষ্ঠানের প্রয়োজন হয় না। ঐতিহ্যবাহী বিবাহে সাধারণত বড় আকারের অনুষ্ঠান, অতিথি আপ্যায়ন এবং অন্যান্য খরচ বেশি হয়।

বাংলাদেশে কোর্ট ম্যারেজের আইনি বৈধতা এবং স্বীকৃতি

বাংলাদেশে এটি সম্পূর্ণ আইনসিদ্ধ এবং বৈধ। এটি বিশেষ বিবাহ আইন, ১৮৭২ (Special Marriage Act, 1872) এর অধীনে সম্পন্ন হয়। এই আইনের অধীনে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিবাহিত দম্পতি সকল ধরনের আইনি সুরক্ষা এবং অধিকার পেয়ে থাকে। বাংলাদেশ সরকার এই প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে এবং এটিকে আইনি স্বীকৃতি প্রদান করে।

কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিবাহিত দম্পতি বিবাহ সনদ প্রাপ্তির মাধ্যমে তাদের বিবাহকে সরকারি নথিপত্রে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন, যা ভবিষ্যতে কোনো ধরনের আইনি প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সনদটি দম্পতির পরিচয়, বিবাহের তারিখ এবং স্থানসহ সমস্ত বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করে এবং এটি একটি সরকারি দলিল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে আপনি আইনি সুরক্ষা এবং অধিকার প্রাপ্ত হবেন, যা আপনার বিবাহিত জীবনের সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তাই কোর্ট ম্যারেজ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সুবিধাজনক প্রক্রিয়া যা আপনাকে একটি সুরক্ষিত বিবাহের অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।

হিন্দু থেকে মুসলিম হতে কি কি প্রয়োজন হয়?

কোর্ট ম্যারেজ এর সুবিধা কোর্ট ম্যারেজ এর সুবিধা

অংশ ২: কোর্ট ম্যারেজ এর সুবিধা (বিশেষ বিবাহ আইন অনুযায়ী)

গোপনীয়তা এবং সরলতা

কোর্ট ম্যারেজের একটি প্রধান সুবিধা হলো এটি ব্যক্তিগত এবং সরল। এখানে সামাজিক বা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন হয় না, ফলে আপনার ব্যক্তিগত জীবন গোপন রাখা সহজ হয়। এই বিয়ের মাধ্যমে আপনি আপনার সম্পর্ককে সামাজিক চোখের আড়ালে রাখতে পারেন, যা অনেক ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে যদি পরিবার বা সমাজের চাপ থেকে মুক্ত থাকতে চান, তাহলে কোর্ট ম্যারেজ একটি আদর্শ পন্থা।

আইনি সুরক্ষা এবং অধিকার

কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিবাহিত দম্পতি আইনি সুরক্ষা এবং অধিকার পেয়ে থাকেন। বাংলাদেশের আইনের অধীনে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে আপনি আপনার বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দিতে পারেন, যা ভবিষ্যতে যে কোনো আইনি জটিলতা থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে প্রাপ্ত বিবাহ সনদটি একটি বৈধ দলিল হিসেবে কাজ করে, যা সম্পত্তি, উত্তরাধিকার, সন্তান গ্রহণ এবং অন্যান্য আইনি বিষয়গুলোতে প্রয়োজন হতে পারে।

ঐতিহ্যবাহী বিবাহের তুলনায় খরচ-সাশ্রয়ী

কোর্ট ম্যারেজের আরেকটি বড় সুবিধা হলো এটি খরচ-সাশ্রয়ী। এখানে বড় আকারের সামাজিক অনুষ্ঠান, অতিথি আপ্যায়ন বা আলাদা পোশাকের প্রয়োজন নেই। আপনি শুধুমাত্র ন্যূনতম সরকারি ফি প্রদান করে বিবাহ সম্পন্ন করতে পারেন। ঐতিহ্যবাহী বিবাহের তুলনায় কোর্ট ম্যারেজের খরচ অনেক কম হয়, যা অনেক দম্পতির জন্য আর্থিকভাবে সুবিধাজনক।

কোর্ট ম্যারেজ সুবিধাজনক যেখানে এমন কিছু উদাহরণ

এটি অনেক ক্ষেত্রে অত্যন্ত সুবিধাজনক হতে পারে। নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো যেখানে কোর্ট ম্যারেজের সুবিধা স্পষ্ট হয়:

  1. বিচ্ছেদযুক্ত বা প্রাক্তন বিবাহিত ব্যক্তি: যদি আপনি বা আপনার সঙ্গী আগে বিবাহিত ছিলেন এবং বর্তমানে আইনি বিচ্ছেদে আছেন, তাহলে এটি একটি সহজ এবং নিরাপদ উপায় হতে পারে পুনরায় বিবাহ করার জন্য।
  2. বিভিন্ন ধর্মের বা সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের মধ্যে বিবাহ: বিভিন্ন ধর্ম বা সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের মধ্যে বিবাহ সামাজিকভাবে অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে আপনি এই চ্যালেঞ্জগুলোকে পাশ কাটিয়ে আইনসিদ্ধভাবে বিবাহ সম্পন্ন করতে পারেন।
  3. দূরত্বের কারণে প্রথাগত বিবাহ অসম্ভব: অনেক সময় প্রবাসী বা বিভিন্ন শহরে অবস্থানরত ব্যক্তিদের জন্য ঐতিহ্যবাহী বিবাহের আয়োজন করা কঠিন হতে পারে। এর মাধ্যমে আপনি সহজেই বিবাহ সম্পন্ন করতে পারেন, যা সময় এবং খরচ দুইই সাশ্রয় করে।
  4. ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করতে ইচ্ছুক দম্পতি: অনেক দম্পতি তাদের বিবাহকে ব্যক্তিগত রাখতে চান। কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারবেন এবং কোনো ধরনের সামাজিক চাপ ছাড়াই বিবাহ সম্পন্ন করতে পারবেন।

এই সুবিধাগুলোর জন্য এটি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পদ্ধতি হয়ে উঠেছে। আপনি যদি একটি সহজ, খরচ-সাশ্রয়ী এবং আইনি সুরক্ষিত বিবাহ করতে চান, তাহলে কোর্ট ম্যারেজ হতে পারে আপনার জন্য সঠিক পছন্দ।

 

সাধারন কোর্ট ম্যারেজের সুবিধা, অসুবিধা এবং সতর্কতা

কোর্ট ম্যারেজের অসুবিধা

কোর্ট ম্যারেজের অসুবিধা অনেক এবং সুবিধা বলতে তেমন কিছু নেই। প্রধান অসুবিধাগুলি হলো:

  • বিয়ে প্রমাণ করা যায় না: আইনি স্বীকৃতি না থাকায় বিয়ে প্রমাণ করা কঠিন।
  • প্রতারণার ঝুঁকি: প্রতারণার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই: কোর্ট ম্যারেজকে বাংলাদেশের আইন স্বীকৃতি দেয় না।
  • আইনি ঝামেলা: ছেলে-মেয়ের বাবা-মা মামলা করলে ঝামেলা এড়ানোর উপায় থাকে না।

কোর্ট ম্যারেজের সুবিধা

কোর্ট ম্যারেজ তখনই সুবিধাজনক, যখন এটি রেজিস্ট্রেশনের সাথে সম্পন্ন হয় এবং অতিরিক্ত সাপোর্ট হিসাবে ব্যবহৃত হয়:

  • বৈধ বিবাহের স্বীকৃতি: ছেলে-মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে এবং রেজিস্ট্রেশন সহ চুক্তিপত্রে আবদ্ধ হলে, এটি আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য হয়।
  • মিথ্যা মামলার প্রতিরোধ: বাবা-মা মিথ্যা মামলা করলে, চুক্তিপত্র অতিরিক্ত সাপোর্ট হিসাবে কাজ করে।
  • আইনি স্বাক্ষর: চুক্তিপত্রে স্বেচ্ছায় এবং স্বজ্ঞানে বিয়ের স্বাক্ষর থাকে, যা নোটারী পাবলিক এবং আইনজীবীর দ্বারা স্বাক্ষরিত হয়।

সুতারাং কোর্ট ম্যারেজ এর জন্য অভিজ্ঞ কোন আইনজীবির পরামর্শ গ্রহন করা অত্যাবশ্যক। নতুবা নানা রকম ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়। কোর্ট ম্যারেজের জন্য আমাদের সাথে আপনারা ফ্রি পরামর্শ গ্রহন করতে পারেন।

অংশ ৩: কোর্ট ম্যারেজের জন্য প্রয়োজনীয় দলিলাদি

প্রয়োজনীয় দলিলাদির তালিকা (জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র ইত্যাদি)

কোর্ট ম্যারেজ সম্পন্ন করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট দলিলাদি প্রয়োজন হয়। নিচে প্রয়োজনীয় দলিলাদির তালিকা দেওয়া হলো:

  1. জন্ম সনদপত্র (Birth Certificate): উভয় পক্ষের জন্ম সনদপত্রের প্রয়োজন হবে।
  2. জাতীয় পরিচয়পত্র (NID): উভয় পক্ষের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা পাসপোর্টের কপি।
  3. ছবি: উভয় পক্ষের পাসপোর্ট সাইজের সাম্প্রতিক ছবি।
  4. বিবাহবিচ্ছেদ সনদ (যদি প্রযোজ্য হয়): যদি কোনো পক্ষ পূর্বে বিবাহিত থাকে এবং আইনি বিচ্ছেদ ঘটে থাকে, তবে বিবাহবিচ্ছেদ সনদপত্র জমা দিতে হবে।
  5. নোটিশ ফরম: বিবাহের ইচ্ছা সম্পর্কিত নোটিশ ফরম পূরণ করতে হবে।
  6. সাক্ষীর পরিচয়পত্র: নির্দিষ্ট সংখ্যক সাক্ষীর জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি।

এসব দলিল কোথা থেকে এবং কিভাবে সংগ্রহ করবেন

নিচে উল্লেখিত দলিলাদির প্রাপ্তিস্থান এবং সংগ্রহ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য:

  1. জন্ম সনদপত্র: জন্ম সনদপত্র স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা সিটি কর্পোরেশন অফিস থেকে সংগ্রহ করা যায়। অনলাইনে আবেদন করেও জন্ম সনদপত্র সংগ্রহ করা সম্ভব।
  2. জাতীয় পরিচয়পত্র (NID): জাতীয় পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে বা অনলাইনে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে সংগ্রহ করা যায়।
  3. ছবি: নিকটস্থ কোনো ফটো স্টুডিও থেকে পাসপোর্ট সাইজের ছবি তোলা যায়।
  4. বিবাহবিচ্ছেদ সনদপত্র: এটি স্থানীয় আদালত বা সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
  5. নোটিশ ফরম: এই ফরমটি কোর্ট বা ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের অফিস থেকে সংগ্রহ করা যায়।
  6. সাক্ষীর পরিচয়পত্র: সাক্ষীদের জাতীয় পরিচয়পত্র স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে সংগ্রহ করা যায় বা অনলাইনে ডাউনলোড করা সম্ভব।

সব দলিল সঠিকভাবে প্রস্তুত করার টিপস

নিচে সব দলিল সঠিকভাবে প্রস্তুত করার কিছু টিপস দেওয়া হলো:

  1. দলিলের কপি ও আসল: সব দলিলের একাধিক কপি করে রাখুন এবং আসল দলিলগুলিও সাথে রাখুন। কপি এবং আসল উভয়ই বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজন হতে পারে।
  2. প্রয়োজনীয় তথ্য পরীক্ষা: প্রতিটি দলিলে উল্লিখিত তথ্য সঠিকভাবে পরীক্ষা করুন। কোনো প্রকার ভুল বা ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করুন।
  3. ছবি স্পষ্ট এবং সাম্প্রতিক: পাসপোর্ট সাইজের ছবি স্পষ্ট এবং সাম্প্রতিক হতে হবে। ছবি তোলার সময় নির্দিষ্ট নিয়মাবলী অনুসরণ করুন।
  4. জন্ম সনদপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের সামঞ্জস্যতা: জন্ম সনদপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য যেমন নাম, জন্ম তারিখ এবং পিতামাতার নাম একই হতে হবে। অসামঞ্জস্য থাকলে সংশোধন করে নিন।
  5. নোটিশ ফরম পূরণ: নোটিশ ফরম পূরণের সময় সাবধানে এবং সঠিক তথ্য ব্যবহার করুন। ভুল তথ্য দিলে বিবাহ প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হতে পারে।
  6. সাক্ষীর নির্বাচন: সাক্ষী নির্বাচন করার সময় নিশ্চিত করুন যে তারা বিশ্বস্ত এবং প্রয়োজনীয় সময়ে উপস্থিত থাকতে পারবেন। তাদের পরিচয়পত্রের কপি সঠিকভাবে সংগ্রহ করুন।

উপরোক্ত দলিলাদি সঠিকভাবে প্রস্তুত করে এবং নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কোর্ট ম্যারেজ সম্পন্ন করা যাবে। সব দলিল সঠিকভাবে প্রস্তুত করা হলে, কোর্ট ম্যারেজ প্রক্রিয়াটি সহজ এবং দ্রুত সম্পন্ন হবে।

অংশ ৪: কোর্ট ম্যারেজের প্রক্রিয়া

কোর্ট ম্যারেজ প্রক্রিয়ার ধাপে ধাপে গাইড

কোর্ট ম্যারেজ প্রক্রিয়া বেশ কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। নিচে ধাপে ধাপে বিস্তারিত গাইড দেওয়া হলো:

১. বিবাহের ইচ্ছা সম্পর্কিত নোটিশ জমা দেওয়া

প্রথম ধাপ হলো বিবাহের ইচ্ছা সম্পর্কিত নোটিশ জমা দেওয়া। এই নোটিশটি কোর্ট বা ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের অফিসে জমা দিতে হয়। নোটিশ ফরমে উভয় পক্ষের নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করতে হবে। এই নোটিশ জমা দেওয়ার পর অন্তত ২১ দিন অপেক্ষা করতে হয়।

২. দলিলাদি জমা দেওয়া

নোটিশ জমা দেওয়ার পর, প্রয়োজনীয় দলিলাদি জমা দিতে হয়। এসব দলিলাদির মধ্যে রয়েছে:

  • জন্ম সনদপত্র
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • বিবাহবিচ্ছেদ সনদপত্র (যদি প্রযোজ্য হয়)
  • সাক্ষীর পরিচয়পত্র

দলিলাদি জমা দেওয়ার সময় নিশ্চিত করুন যে সব দলিল সঠিকভাবে পূরণ এবং স্বাক্ষরিত হয়েছে।

৩. বিয়ে রেজিস্ট্রারের দ্বারা যাচাই

সব দলিলাদি জমা দেওয়ার পর, বিয়ে রেজিস্ট্রার জমাকৃত দলিলাদি যাচাই করবেন। রেজিস্ট্রার জমাকৃত তথ্যের সত্যতা এবং সঠিকতা পরীক্ষা করবেন। এই যাচাই প্রক্রিয়ার সময় উভয় পক্ষকে উপস্থিত থাকতে হতে পারে। যাচাই প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা বা ত্রুটি পাওয়া গেলে তা সমাধান করতে হবে।

৪. বিবাহ আনুষ্ঠানিকতার সমাপ্তি

সব যাচাই প্রক্রিয়া শেষ হলে এবং দলিলাদি সঠিক থাকলে, বিয়ে রেজিস্ট্রার বিবাহ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন। এই সময় উভয় পক্ষ এবং তাদের সাক্ষীরা উপস্থিত থাকবেন। বিয়ে রেজিস্ট্রার বিবাহ সম্পন্ন করার পর বিবাহ সনদ প্রদান করবেন, যা আইনসিদ্ধ বিবাহের প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।

৫. প্রত্যাশিত সময়সীমা এবং সম্ভাব্য বিলম্ব

কোর্ট ম্যারেজ প্রক্রিয়া সাধারণত ২১ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়। তবে কোনো দলিলাদি অসম্পূর্ণ বা ভুল হলে অথবা যাচাই প্রক্রিয়ায় কোনো জটিলতা দেখা দিলে প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হতে পারে। সব দলিলাদি সঠিকভাবে প্রস্তুত এবং সময়মতো জমা দিলে প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়।

৬. আইনি ফি এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট খরচ

কোর্ট ম্যারেজ প্রক্রিয়ায় কিছু আইনি ফি এবং খরচ জড়িত থাকে। সাধারণত এই ফি এবং খরচগুলো নিম্নরূপ:

  • নোটিশ ফি: নোটিশ জমা দেওয়ার সময় নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়।
  • দলিলাদি যাচাই ফি: বিয়ে রেজিস্ট্রারের দ্বারা দলিলাদি যাচাইয়ের জন্য নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হয়।
  • বিবাহ সনদ ফি: বিবাহ সনদ সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হয়।

খরচ:

  • নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প: ৩০০ টাকা
  • আইনজীবীর ফি: প্রক্রিয়ার জটিলতা এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।
  • অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ: বিভিন্ন খরচ যেমন, নথিপত্র প্রস্তুত, ছবির খরচ ইত্যাদি।

এছাড়াও, দলিলাদি সংগ্রহ এবং প্রস্তুত করার খরচ থাকতে পারে। সব ফি এবং খরচ সম্পর্কে আগে থেকেই জেনে রাখা এবং প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন।

কোর্ট ম্যারেজ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য উপরোক্ত ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে। সব দলিলাদি সঠিকভাবে প্রস্তুত এবং জমা দিলে, প্রক্রিয়া সহজ এবং দ্রুত সম্পন্ন হবে।

কোর্ট ম্যারেজের বয়স

বাংলাদেশের আইনে বিয়ের নির্দিষ্ট বয়স সীমা রয়েছে। সকল ধর্মের ক্ষেত্রে ছেলের বয়স ২১ এবং মেয়ের বয়স ১৮ হতে হবে। বিশেষ আইনে মা-বাবা বা আদালতের অনুমতিতে মেয়ের বয়স একটু কম হলেও বিয়ে করা যায়।

কোর্ট ম্যারেজের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

  1. বয়স প্রমাণের ডকুমেন্ট: এনআইডি, জন্মনিবন্ধন, পাসপোর্ট, বা বোর্ড পরীক্ষার সার্টিফিকেট (যে কোন একটি)।
  2. ছবি: ছেলে-মেয়ের পাসপোর্ট সাইজের তিন কপি ছবি (হিন্দু হলে ৪ কপি)।
  3. সাক্ষী: প্রাপ্তবয়স্ক দুই জন সাক্ষী (হিন্দু হলে ৪ জন)।

কোর্ট ম্যারেজ এর খরচ কত

কোর্ট ম্যারেজের খরচ নির্দিষ্ট নয়। জুন ২০২২ থেকে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প লাগে, তবে অ্যাডভোকেট ও ম্যাজিস্ট্রেট বা নোটারি পাবলিকের সম্মানির উপর নির্ভর করে খরচ বাড়তে পারে।

কোর্ট ম্যারেজ এর খরচ কত কোর্ট ম্যারেজ এর খরচ কত

বিয়ের রেজিস্ট্রেশন খরচ ২০২৪

বিয়ের রেজিস্ট্রেশন ফি ২০২৩ থেকে বাড়ানো হয়েছে। বিধিমালা ২০০৯ (সংশোধন ২০২২)-এর ২১ বিধি অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে:

  • এক লাখ টাকা কাবিননামায়: ১৪০০ টাকা
  • দুই লাখ টাকা কাবিননামায়: ২৮০০ টাকা
  • তিন লাখ টাকা কাবিননামায়: ৪২০০ টাকা
  • চার লাখ টাকা কাবিননামায়: ৫৬০০ টাকা
  • পাঁচ লাখ টাকা কাবিননামায়: ৭০০০ টাকা
  • প্রতি অতিরিক্ত লাখ: ১০০ টাকা

কোর্ট ম্যারেজ কি ইসলামে বৈধ?

কোর্ট ম্যারেজ কোন ধর্মেই সমর্থন পায় না এবং বাংলাদেশের আইনে কোর্ট ম্যারেজ বলে কিছু নেই। ইসলামে বৈধ বিবাহের জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়।

ইসলামিক বিবাহের শর্তাবলী

হানাফি মাজহাব অনুযায়ী, একটি বিবাহ বৈধ হওয়ার তিনটি প্রধান শর্ত আছে:

  1. দুই জন সাক্ষী: ২ জন পুরুষ সাক্ষী বা ৪ জন নারী সাক্ষী থাকতে হবে।
  2. ইজাব এবং কবুল: প্রস্তাব (ইজাব) এবং গ্রহণ (কবুল) প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে হবে।
  3. দেনমোহর: একটি নির্দিষ্ট দেনমোহর ধার্য করতে হবে।

বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের প্রধান সুবিধাসমূহ

  1. সমাজের স্বীকৃতি ও সন্তানের পরিচয় নিশ্চিতকরণ: সমাজে সন্তানের বৈধ পরিচয় নিশ্চিত করতে ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন।
  2. বিদেশ গমন ও ভ্রমণ: বিদেশে গমন, ভ্রমণ, বাসাভাড়া, হোটেল বুকিং ইত্যাদি কাজে ম্যারেজ সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়।
  3. স্পাউস ভিসা: স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে বিদেশ গমনের জন্য স্পাউস ভিসায় ম্যারেজ সার্টিফিকেট লাগে।
  4. হজ পালন: মুসলিমদের জন্য হজ পালনে ম্যারেজ সার্টিফিকেট অপরিহার্য।
  5. সরকারি তথ্য ভান্ডারে নথিভুক্তকরণ: রেজিস্ট্রেশনের ফলে বিয়ের সব তথ্য সরকারি তথ্য ভান্ডারে নথিভুক্ত হয়, যা এর সত্যতা নিশ্চিত করে।
  6. প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা কমানো: বিশেষ করে নারীদের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
  7. প্রতারণা প্রতিরোধ: স্বামী বা স্ত্রী প্রতারণার শিকার হলে এই রেজিস্ট্রেশন সনদ আইনি রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।
  8. সম্পত্তির বৈধ দাবি: স্বামীর মৃত্যুর পর সম্পত্তির বৈধ অংশসহ অন্যান্য দাবি আদায়ে এই দলিল অত্যাবশ্যক।

অংশ ৫: কোর্ট ম্যারেজের পরবর্তী করণীয়

১. বিবাহ সনদ নিবন্ধন

কোর্ট ম্যারেজ সম্পন্ন হওয়ার পর প্রথম ধাপ হলো বিবাহ সনদ নিবন্ধন করা। কোর্ট বা ম্যারেজ রেজিস্ট্রার দ্বারা প্রদত্ত বিবাহ সনদ হলো আপনার বিবাহের আইনি প্রমাণ। এই সনদটি আপনি নিকটস্থ ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন অফিসে নিবন্ধন করাতে পারেন। নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি আপনার বিবাহের সমস্ত তথ্য সরকারি রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করে, যা ভবিষ্যতে প্রয়োজন হতে পারে।

২. অফিসিয়াল দলিলাদিতে বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন করা

বিবাহ সম্পন্ন এবং নিবন্ধনের পর, বিভিন্ন অফিসিয়াল দলিলাদিতে আপনার বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এটি আপনার আইনি এবং সামাজিক পরিচয় নিশ্চিত করে। নিচে কিছু প্রধান দলিলাদির তালিকা এবং পরিবর্তন প্রক্রিয়া দেওয়া হলো:

  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID): জাতীয় পরিচয়পত্রে বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন করতে নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করুন এবং প্রয়োজনীয় ফরম পূরণ করুন।
  • পাসপোর্ট: পাসপোর্টে বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন করতে পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করুন এবং প্রয়োজনীয় দলিলাদি জমা দিন।
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট: আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য আপডেট করতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করুন এবং বিবাহ সনদ প্রদর্শন করুন।
  • ট্যাক্স রিটার্ন: ট্যাক্স রিটার্নে বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন করতে আয়কর অফিসে যোগাযোগ করুন এবং প্রয়োজনীয় ফরম পূরণ করুন।

৩. বাংলাদেশী আইনের অধীনে বিবাহিত দম্পতির অধিকার এবং দায়িত্ব

বিবাহিত দম্পতি হিসেবে বাংলাদেশী আইনের অধীনে আপনার কিছু অধিকার এবং দায়িত্ব রয়েছে। নিচে কিছু প্রধান অধিকার এবং দায়িত্বের তালিকা দেওয়া হলো:

অধিকার:
  • সংসার: স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই সংসার পরিচালনা এবং জীবিকা নির্বাহের অধিকার রয়েছে।
  • সম্পত্তি: স্বামী-স্ত্রী উভয়েই তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার রাখে এবং যৌথ সম্পত্তির ক্ষেত্রেও অধিকার রয়েছে।
  • উত্তরাধিকার: বিবাহিত দম্পতি হিসেবে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের উত্তরাধিকারী হতে পারে।
  • সন্তান: সন্তান জন্মদানের অধিকার এবং সন্তানের উপর অভিভাবকত্বের অধিকার রয়েছে।
দায়িত্ব:
  • সহায়তা: স্বামী-স্ত্রী উভয়ের একে অপরের প্রতি সহায়তা এবং যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে।
  • আর্থিক সহায়তা: উভয়ের একে অপরের এবং সন্তানের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের দায়িত্ব রয়েছে।
  • আচরণ: বিবাহিত জীবনে একে অপরের প্রতি সম্মানজনক এবং সুষ্ঠু আচরণ করার দায়িত্ব রয়েছে।

বিবাহিত জীবন একটি সুন্দর এবং দায়িত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠে। আইনি সুরক্ষা এবং অধিকার সম্পর্কে সচেতন থেকে আপনি আপনার বিবাহিত জীবনকে আরও সুরক্ষিত এবং সফল করতে পারেন।

উপসংহার

উপরোক্ত ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করে আপনি কোর্ট ম্যারেজের পরবর্তী প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারেন। এটি আপনার বিবাহিত জীবনকে আরও সুরক্ষিত এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করবে।

আমরা চাই প্রতিটা ভালোবাসাই পূর্ণতা পাক, কিন্তু সেটা মা-বাবার অজান্তে না। চেষ্টা করুন মা-বাবাকে বুঝিয়ে মেনে নিতে। বিয়ের আগে মনে হতে পারে, মা-বাবা না মানলে কি হবে, কিন্তু পরে দেখবেন এভাবে আর চলবে না। মা-বাবার দোয়া নিয়েই নতুন জীবনের শুরু করুন।

অংশ ৬: সাধারণ প্রশ্নাবলী (FAQ)

১. বিদেশিরা কি বাংলাদেশে কোর্ট ম্যারেজ করতে পারে?

হ্যাঁ, বিদেশিরা বাংলাদেশে কোর্ট ম্যারেজ করতে পারে। তবে এর জন্য উভয় পক্ষকে প্রয়োজনীয় দলিলাদি জমা দিতে হবে এবং বাংলাদেশে বৈধভাবে থাকার প্রমাণপত্র প্রদর্শন করতে হবে। বিদেশিদের জন্য প্রয়োজনীয় দলিলাদির মধ্যে রয়েছে পাসপোর্ট, ভিসা, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র।

২. যদি এক বা উভয় পক্ষ আগে বিবাহিত থাকে, তবে কি কোর্ট ম্যারেজ করা সম্ভব?

হ্যাঁ, এক বা উভয় পক্ষ যদি আগে বিবাহিত থাকে এবং বর্তমানে আইনত বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে থাকে, তবে তারা কোর্ট ম্যারেজ করতে পারে। এর জন্য বিবাহবিচ্ছেদ সনদপত্র জমা দিতে হবে। এই সনদপত্র প্রমাণ করে যে তারা আইনি বিচ্ছেদ প্রাপ্ত এবং পুনরায় বিবাহ করতে পারে।

৩. যদি কোর্ট ম্যারেজের সময় কোনো আপত্তি উঠে, তাহলে কী করতে হবে?

কোর্ট ম্যারেজের সময় যদি কোনো আপত্তি উঠে, তাহলে প্রথমে সেই আপত্তির কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এরপর প্রয়োজনীয় দলিলাদি এবং প্রমাণপত্র জমা দিয়ে আপত্তি সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। যদি আপত্তি সমাধান না হয়, তাহলে আদালতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।

৪. কোর্ট ম্যারেজের জন্য কতজন সাক্ষী প্রয়োজন?

কোর্ট ম্যারেজের জন্য সাধারণত দুইজন সাক্ষী প্রয়োজন হয়। এই সাক্ষীরা বিবাহের সময় উপস্থিত থাকবেন এবং বিবাহের বৈধতার প্রমাণ স্বরূপ স্বাক্ষর করবেন। সাক্ষীদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টের কপি জমা দিতে হবে।

৫. কোর্ট ম্যারেজে কি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের প্রয়োজন হয়?

না, কোর্ট ম্যারেজ সম্পূর্ণরূপে আইনি প্রক্রিয়া এবং এর জন্য কোনো ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের প্রয়োজন হয় না। তবে আপনি চাইলে পরবর্তীতে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করতে পারেন।

৬. কোর্ট ম্যারেজের পর কি আলাদা করে সামাজিক বিবাহ অনুষ্ঠান করা প্রয়োজন?

কোর্ট ম্যারেজের পর সামাজিক বিবাহ অনুষ্ঠান করা প্রয়োজন নেই। তবে আপনি চাইলে পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে ছোট বা বড় আকারের সামাজিক অনুষ্ঠান করতে পারেন। এটি সম্পূর্ণরূপে আপনার ব্যক্তিগত পছন্দের উপর নির্ভর করে।

৭. কোর্ট ম্যারেজের জন্য কত টাকা খরচ হয়?

কোর্ট ম্যারেজের খরচ সাধারণত নির্দিষ্ট সরকারি ফি এবং কিছু আইনি ফি অন্তর্ভুক্ত করে। খরচের পরিমাণ সাধারণত নোটিশ জমা, দলিলাদি যাচাই, এবং বিবাহ সনদ প্রাপ্তির ফি দ্বারা নির্ধারিত হয়।

৮. কোর্ট ম্যারেজের সময় কোনো আইনি পরামর্শ প্রয়োজন হলে কোথায় পাওয়া যাবে?

কোর্ট ম্যারেজের সময় কোনো আইনি পরামর্শ প্রয়োজন হলে আপনি একজন অভিজ্ঞ অ্যাডভোকেটের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। অ্যাডভোকেট আপনাকে প্রয়োজনীয় দলিলাদি প্রস্তুত করতে এবং প্রক্রিয়ার সময় আইনি সহায়তা প্রদান করতে সক্ষম হবেন।

এই প্রবন্ধটি কোর্ট ম্যারেজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে, যা আপনাকে এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেবে এবং প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা পেতে সহায়ক হবে। কোর্ট ম্যারেজের সুবিধা এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পর, আপনি যদি এই পদ্ধতিতে বিবাহ সম্পন্ন করতে চান, তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করুন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা নিন।

৯. কোর্ট ম্যারেজের পর বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন করা সম্ভব?

হ্যাঁ, কোর্ট ম্যারেজের পর বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন করা সম্ভব। এটি বিধিমালা অনুযায়ী সম্ভব। এটির জন্য প্রয়োজনীয় দলিলাদি এবং অন্যান্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

১০. কোর্ট ম্যারেজের পর আমি কি পূর্বের বিবাহের সনদ দেখাতে পারি?

কোর্ট ম্যারেজের পর আপনি কোর্ট ম্যারেজ সনদপত্র পাবেন যা বিবাহের প্রমাণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি সরকারী অফিসে ও আবাসিক নিবন্ধন প্রতিষ্ঠানে আপনার বৈধতা প্রমাণ করতে পারে।

১১. কোর্ট ম্যারেজে কত সময়ে বিবাহ সম্পন্ন হয়?

কোর্ট ম্যারেজে বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার সময়সীমা বিভিন্ন কারণে পরিবর্তন হতে পারে। সাধারণত এটি কিছু সপ্তাহ থেকে কিছু মাস নেওয়া সম্ভব।

১২. কোর্ট ম্যারেজে অনিচ্ছুক হিসেবে করা যাবে?

কোর্ট ম্যারেজে অনিচ্ছুক হিসেবে করা যায় না। এটি উভয় পক্ষের ইচ্ছামত হতে হবে। যদিও কোর্টের কাছে বিবাহের ইচ্ছামত প্রমাণ প্রদান করা প্রয়োজন।

১৩. কোর্ট ম্যারেজে কি সময়ে অবিবাহিত হতে পারি?

হ্যাঁ, কোর্ট ম্যারেজে আপনি সর্বত্র অবিবাহিত থাকা প্রয়োজন নেই। আপনি যদি ইচ্ছা করেন তাহলে কোর্ট ম্যারেজ করতে পারেন।

১৪. কোর্ট ম্যারেজের জন্য যে কাগজপত্র প্রয়োজন তা সম্পর্কে আমি কী জানতে পারি?

কোর্ট ম্যারেজের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হিসাবে সাধারণত জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, ও প্রমাণিত প্রত্যাখ্যান স্বীকৃত নাগরিকত্বের দলিল উল্লেখ করা হয়।

১৫. আমি কোর্ট ম্যারেজের প্রস্তুতি করতে যে কাগজপত্র প্রয়োজন, সেগুলি কী এবং কোথা থেকে পেতে পারি?

আপনি জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, ও প্রমাণিত প্রত্যাখ্যান স্বীকৃত নাগরিকত্বের দলিল নিয়ে কোর্ট ম্যারেজের প্রস্তুতি করতে পারেন। এই দলিলাদি আপনি স্থানীয় মুদ্রার অফিস, জন্ম নিবন্ধন কার্যালয়, ও সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পেতে পারেন।

১৬. কোর্ট ম্যারেজের প্রক্রিয়াতে যে খরচ আসে, সেগুলি কী?

কোর্ট ম্যারেজের প্রক্রিয়াতে আসা খরচ সাধারণত নোটারি ফি, কোর্ট ফি, ও অন্যান্য যে কোন অফিসিয়াল খরচের মধ্যে থাকে।

১৭. কোর্ট ম্যারেজের পর কি অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া আছে?

কোর্ট ম্যারেজের পর অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া হিসাবে বিবাহ সনদের নিবন্ধন, বিবাহিত স্থিতি পরিবর্তন, এবং সরকারী অফিসিয়াল দলিলাদিতে বিবাহিত স্থিতি পরিবর্তন করা আছে।

১৮. কোর্ট ম্যারেজের প্রক্রিয়াটি কতক্ষণ সময় নেবে?

কোর্ট ম্যারেজের প্রক্রিয়াটি প্রতি মামলার সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সময় নেওয়া যায়। সাধারণত এটি কিছু সপ্তাহ থেকে কিছু মাস নেওয়া সম্ভব।

অংশ ৭: আমার সাথে যোগাযোগ করুন

অ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান রাশেদ

আমি, অ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান রাশেদ, কোর্ট ম্যারেজ এবং অন্যান্য আইনি বিষয়ক বিষয়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করছি। আমার সাথে যোগাযোগ করে আপনি বিনামূল্যে প্রাথমিক পরামর্শ নিতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা পেতে পারেন।

  • ফ্রি প্রাথমিক পরামর্শ:
    • যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর: +৮৮০১৭৮৫৪৬০০৮৫, +৮৮০১৩১৫১৫২৭৪৩
    • ইমেইল: sparkadvocatesbd@gmail.com
    • অফিস ঠিকানা ১:  সান্ধ্যকালীন চেম্বার- ২৯৯, গোলাহাট, সৈয়দপুর, নীলফামারি।
    • অফিস ঠিকানা ২:  কোর্ট চেম্বার- হল রুম ৩, নীলফামারি বার সমিতি ভবন, নীলফামারি।
  • অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং:

মুসলিম কোর্ট ম্যারেজ এর নমুনা কপি

কোর্ট ম্যারেজ 2024 ফরমেট

কোর্ট ম্যারেজ করার নিয়মাবলী:

নীচে বিবাহের হলফনামা নমুনা ফরমেট প্রদান করা হলো:

 

 

“বিবাহের হলফনামা”

 

মোকামঃ বিজ্ঞ নোটারী পাবলিকের কার্যালয়, নীলফামারী।

বিবাহের হলফনামা

আমরা, ১ম পক্ষঃ —–, পিতা- ——-, মাতা- ——-, ঠিকানাঃ বাসা/হোল্ডিং- উত্তর ——-, গ্রাম/রাস্তা- ——-, ডাকঘর- ——-, থানা- ——-, জেলা- নীলফামারি, জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ——-, জন্ম তারিখ- ——-, জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ——-।

 

২য় পক্ষঃ ——–, পিতা- ——–, মাতা- ——–, ঠিকানাঃ বাসা/হোল্ডিং- ——–, গ্রাম/রাস্তা- ——–, ডাকঘর- ——–, থানা- ——–, জেলা- নীলফামারি, জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ——–, জন্ম তারিখ- ——–, জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- হিন্দু।

 

 

এই মর্মে আমরা উভয়ে যৌথভাবে হলফনামা মূলে অঙ্গীকার ও শপথ ঘোষণা করিতেছি যে,

১. আমরা হলফকারী/হলফকারীনিদ্বয় জন্মসূত্রে বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা ও নাগরিক বটে ।

২. আমরা হলফকারী/হলফকারীনিদ্বয় উভয় সাবালক/সাবালিকা বিধায় আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের ভালমন্দ চিন্তা ভাবনা করার যথেষ্ট জ্ঞান আমাদের আছে এবং যে কোন প্রকার হলফ করার আইনগত অধিকারী বটে।

৩. আমরা হলফকারী ও হলফকারীনি দীর্ঘদিনের পরিচয়ের সুবাদে পরস্পরের সহিত কথাবার্তা, চাল-চলন, আচার-আচারণ ও আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ঘনিষ্টভাবে পরিচিত হই ও একে অপরকে ভালভাবে চিনি ও জানি। আমাদের এই চিনা-জানা, কথা-বার্তা ও চলাফেরার মাধ্যমে আমাদের মধ্য পবিত্র ভালোবাসার জন্ম নেয় ।

৪. আমি ১ম পক্ষ ——– ঘোষনা করিতেছি যে, উক্ত দ্বিতীয় পক্ষ ——– এর বিনয়, ভদ্রতা, নম্নতা, মার্জিত, আচার-আচরণ ও ব্যক্তিত্বের প্রতি আকৃষ্ট হইয়া তাহাকে মনে প্রাণে ভালোবাসিয়া ফেলি এবং সেও আমাকে মনে প্রাণে ভালোবাসিয়া আসিতেছে

৫. আমি ২য় পক্ষ ——– আরো ঘোষণা করিতেছি যে, ——–এর সহিত দীর্ঘদিন যাবৎ ঘনিষ্ঠ হইবার সুবাদে তার উত্তম চারিত্রিক গুণাবলীর প্রতি আকৃষ্ট হইয়া তাহাকে মনে প্রাণে ভালোবাসিয়া ফেলি এবং সেও আমাকে মনে প্রাণে ভালোবাসিয়া আসিতেছে ।

৬. অদ্য হইতে আমরা উভয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে সর্বত্র সর্বাবস্থায় পরিচিত হইব এবং ঘর-সংসার করিব ও একজন অন্যজনের সুখে-দুঃখে আজীবন পাশাপাশি থাকিব ।

৭. আমি ২য় পক্ষ হলফকারীনি ——–,আরো ঘোষণা করিতেছি যে, আমি স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে এবং কাহারো প্ররোচনায় ছাড়া অত্র বিবাহের হলফনামা সম্পাদন করিলাম। যদি ভবিষ্যতে আমরা পরিবার কেহ আমার উক্ত স্বামীসহ কাহারো নামে কোন প্রকার অভিযোগ আনেন তাহা আইন সম্মত গ্রহণযোগ্য হইবে না ।

৮. আমি ১ম পক্ষ হলফকারী ——–, ২য় পক্ষ ——– স্ত্রী হিসাবে আজীবন মর্যাদা দিব এবং আমার স্ত্রীকে কোনরুপ কষ্ট দিব না।

৯. আমাদের অত্র বিবাহ আমাদের উভয়ের সম্মতিতে এবং স্বেচ্ছায় সম্পাদিত হইল । অদ্য বিবাহে কোন পক্ষ কর্তৃক কোনরুপ জোর জবরদস্তি করা হয় নাই ।

১০. আমরা উভয়ে আরো ঘোষণা করিতেছি যে, আমাদের উক্ত বিবাহের ব্যাপারে যদি আমাদের মা- বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী যে কেহ কোন প্রকার আপত্তি করে তবে উহা সর্ব আইন আদালতে অগ্রাহ্য ও বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে ।

 

উপরোক্ত বিবরনস্মূহ আমার বর্ননা মোতাবেক লিখিত হওয়ায় আমি স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে, অন্যের বিনা প্ররোচনায় অত্র এফিডেভিট সম্পাদন পূর্বক নিজ নাম স্বাক্ষর করিলাম।

(হলফকারী/হলফকারীনিদ্বয়ের স্বাক্ষর)

১।

২।

 

 

এফিডেভিটকারীকে চিনিলাম।

তিনি আমার সম্মুক্ষে অত্র এফিডেভিটে

স্বাক্ষর  প্রদান করিয়াছেন।

 

 

 

এডভোকেট

জজ কোর্ট, নীলফামারী।

Download

কোর্ট ম্যারেজ এর মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ফরম্যাট ডাউনলোড করুনঃ কোর্ট ম্যারেজ ফরমাট

কোর্ট ম্যারেজ এর মাইক্রোসফট PDF ফরম্যাট ডাউনলোড করুনঃ  কোর্ট ম্যারেজ PDF

 

বাংলাদেশের কোর্ট ম্যারেজের আইনি বাস্তবতা ও সমস্যাবলী

বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, এবং এটি সাধারণত পরিবারের সম্মতি নিয়ে করা উচিৎ। তবে, অনেক তরুণ-তরুণী আবেগের বশবর্তী হয়ে মনে করেন কিছু কাগজপত্র সম্পন্ন করলেই কোর্টে তাদের বিয়ে আইনত স্বীকৃত হবে। এই ভুল ধারণা “কোর্ট ম্যারেজ” নামক ধারণা থেকে উদ্ভূত, যা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের আইনে কোন ভিত্তি নেই।

কোর্ট ম্যারেজের মিথ

“কোর্ট ম্যারেজ” শব্দটি প্রায়ই ভুল বোঝা হয়। যখন যুবক-যুবতি হলফনামায় স্বাক্ষর করে যে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একসাথে বসবাস করবে, তখন তারা প্রায়ই মনে করে যে এই হলফনামা তাদের আইনি বিয়ে। সাধারণত নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে নোটারি পাবলিকের অফিসে স্বাক্ষরিত এই হলফনামা শুধুমাত্র একটি ঘোষণাপত্র এবং এটি বিয়ের আইনি স্বীকৃতির জন্য যথেষ্ট নয়।

বৈধ বিয়ের জন্য আইনি প্রয়োজনীয়তা

একটি বৈধ বিয়ে নিশ্চিত করতে হলে কাজীর (বিবাহ রেজিস্টার) অফিসে নিবন্ধন করা অত্যাবশ্যক। যদি বিয়ে কাজীর অফিসে নিবন্ধিত না হয়, তাহলে এটি আইনি ভিত্তি পাবে না। এর অর্থ, যদি এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ত্যাগ করে, তাহলে কোন আইনি প্রতিকার পাওয়া যাবে না।

বৈধ বিয়ে নিবন্ধনের জন্য পদক্ষেপসমূহ

  1. বয়স যাচাই: উভয় পক্ষেরই আইনি বয়স পূর্ণ করতে হবে—মেয়েদের জন্য ১৮ বছর এবং ছেলেদের জন্য ২১ বছর। বয়স প্রমাণের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র, এসএসসি সার্টিফিকেট বা জন্মনিবন্ধন সনদ প্রয়োজন।
  2. সাক্ষী: বিয়ের জন্য দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ বা একজন পুরুষ এবং দুইজন মহিলা সাক্ষী থাকতে হবে।
  3. ফি: নিবন্ধন ফি দেনমোহরের পরিমাণ অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। ফি ১০০ টাকা থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে হয়, যা দেনমোহরের উপর নির্ভর করে।
  4. হলফনামা: কাজীর অফিসে বিয়ে নিবন্ধনের পর, নোটারি পাবলিকের অফিসে একটি হলফনামায় স্বাক্ষর করা যেতে পারে, যেখানে বলা থাকবে যে তারা আইনগতভাবে বিয়ে করেছে। এই হলফনামা বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে কিছু সুরক্ষা প্রদান করতে পারে কিন্তু এটি অফিসিয়াল নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা প্রতিস্থাপন করতে পারে না।

নিবন্ধন না করার আইনি ফলাফল

মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রিকরণ) আইন, ১৯৭৪ অনুযায়ী, বিয়ে নিবন্ধন না করলে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৩০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

অন্যান্য ধর্মের জন্য বিবাহের পদ্ধতি

  • হিন্দু বিবাহ: হিন্দু রীতিনীতি অনুযায়ী সম্পন্ন করতে হবে। নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয়, তবে হলফনামা ব্যবহার করে ঘোষণা করা যেতে পারে।
  • খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ বিবাহ: ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে নোটারি পাবলিকের কাছে নিবন্ধন করা যেতে পারে।

উপসংহার

একটি আইনসম্মত এবং সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য বিয়ের জন্য কাজীর অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে নিবন্ধন করা এবং পরিবারের সম্মতি নেওয়া সর্বোত্তম পন্থা। এটি আইনি সুরক্ষা এবং সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করে, ভবিষ্যতের বিরোধ এবং জটিলতা কমিয়ে আনে।

Share  This Article Now

Contact info:
Advocate Rashed CEO Spark Advocates
Adv. Rashedujjaman Rashed
Plot 299, Ward 2, Koya Golahat, 1st Floor Opposite Golahat Puraton Mosque, Saidpur
× আমার সাথে চ্যাট করুন।